ইমাম হাসান মুক্তি, লালপুর (নাটোর)
নাটোরের লালপুরে মনিটর কাপ বদন ফাইনাল খেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। দুড়দুড়িয়া কারিগরপাড়া যুব সমাজের উদ্যোগে দাড়িয়াবান্ধা বা বদন বা গাদন খেলায় ১৬টি দল অংশগ্রহণ করে। ঐতিহ্যবাহী খেলা দেখতে এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তি ছাড়াও বিভিন্ন এলাকা থেকে শত শত দর্শক ও খেলাপ্রেমিরা আসেন। গ্রাম বাংলার হারিয়ে যাওয়া এ খেলা দেখতে পেয়ে আনন্দিত।
বুধবার (২২ ডিসেম্বর ২০২১) ফাইনাল খেলায় রাজশাহীর বাঘা উপজেলার চন্ডিপুর ক্ষুদি ছয়খুটি খেলোয়ার কল্যান একাদশ ৩-১ স্কোরে লালপুর উপজেলার দুড়দুড়িয়ার তালবাড়ীয়া যুব একাদশ দলকে পরাজিত করে শিরোপা অর্জন করে। সেরা খেলোয়াড় হন চন্ডিপুর খুদি ছয়খুঁটি দলের আক্কাস আলী (৫৫)। খেলা পরিচালনা করেন রেফারি রবিউল ইসলাম বেন্টু।
খেলা শেষে মো. সোহেল রানার সভাপতিত্বে পুরস্কার বিতরনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন, দুড়দুড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. তোফাজ্জল হোসেন তোফা।
উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক আশফাকুল ইসলাম রিমন বলেন, তিনি নিজেই একজন বদন খেলোয়াড় ছিলেন। কিন্তু এখন যুবকদের মাঝে আর বদন খেলার আগ্রহ নেই। উপজেলা পর্যায়ে বদন খেলার প্রতিযোগিতা আয়োজনের উদ্যোগ নেবেন বলে জানান তিনি।
দুড়দুড়িয়া উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুল জব্বার বলেন, তথ্যপ্রযুক্তির আধুনিকতার ছোয়ায় গ্রাম বাংলার লোক-ঐতিহ্যবাহী খেলা আজ হারিয়ে যেতে বসেছে। গ্রামীণ খেলাধুলাকে বাঁচিয়ে রাখতে এ উদ্যোগ প্রশংসনীয়।
চেয়ারম্যান মো. তোফাজ্জল হোসেন তোফা বলেন, বাংলদেশের গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী বদন বা গাদন খেলাকে বর্তমান সমাজে আর দেখা যায় না বললেই চলে। এক সময় বাংলাদেশের শিশু-যুবকের প্রিয় খেলা ছিল বদন। প্রযুক্তির খেলায় অন্যান্য গ্রামীণ খেলার সাথে সাথে এই খেলাটি আজ সময়ের পথপরিক্রমায় হারিয়ে যাচ্ছে। যুবকদের এই উদ্যোগে তাঁর সমর্থন সব সময় থাকবে।
খেলা পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. আবু জাফর বলেন, পছন্দের দাড়িয়াবান্ধা বা বদন বা গাদন খেলায় ছেলে, মেয়ে ও বয়স্করা অংশ নিতে পারে। এ খেলার মাঠটি ৫০ ফুট লম্বা ও ২০ ফুট প্রস্থে, মাঝখানে সমান্তরাল ৫০ ফুট লম্বা ও ১ ফুট চওড়া একটি লাইন থাকবে। ১ ফুট অন্তর আড়াআড়ি ৪টি লাইনে সমগ্র কোর্টটি ১০ইঞ্চি/১০টি খোপে ভাগ করা থাকবে। আড়াআড়ি ৬টি লাইন ১ ফুট চওড়া হবে।
প্রত্যেক দলে ৫/৬ জন করে খেলোয়াড় থাকে। টস করে আক্রমণকারী ও প্রতিরক্ষাকারী স্থির করা হয়। ২৫ মিনিট খেলা, ৫ মিনিট বিশ্রাম, পুনরায় ২৫ মিনিট খেলা-এই নিয়মে খেলা চলে। খেলার সময় একজন মারা পড়লে অন্যদলের অর্ধাংশ আক্রমণ করার সুযোগ পাবে। খেলায় একজন রেফারী ৬ বা ১২ জন দাড়িয়া জজ ও ২ জন স্কোরার থাকে। খেলার ফলাফল অমীমাংসিত থাকলে ১০-১-১০ মিনিট পুনরায় খেলে খেলার ফলাফল নির্ধারিত করা যায়।