ইমাম হাসান মুক্তি, প্রতিনিধি, লালপুর (নাটোর)
সত্তরের দশকের মাঠে ঝড় তোলা ফুটবলার গণেষ চন্দ্র দাস। ফুটবল নৈপূণ্যে যার খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে দেশ জুড়ে। ১৯৭১ সালে ভারতের জলঙ্গীতে স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলে খেলেছেন। এখন সে জৌলুস আর নেই। আর্থিক অনটনে জীবন দুর্বিসহ। চিকিৎসা করার সামর্থ নেই। খেয়ে-না খেয়ে দিন কাটছে তাঁর।
রোববার (৮ আগস্ট ২০২১) কথা হয় গনেষ চন্দ্র দাসের সাথে। তিনি বলেন, লালপুর শ্রী সুন্দরী পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে লেখাপড়াকালে ১৯৭৭ সালে পুলিশ বাহিনীতে চাকুরীতে যোগ দেন। বাংলাদেশ পুলিশের ফুটবল দলে ১০ বছর নৈপূন্যের সাথে খেলেছেন। আইজিপি দলের ১ নম্বর স্ট্রাইকার ছিলেন। তিনি রাজশাহীর দিগন্ত প্রসারী ক্লাবের অধিনায়ক ছিলেন। খুলনার দাদা ম্যাচ ফ্যাক্টরী দলের হয়ে খেলেছেন। রাজশাহী ও নাটোর জেলা দলের হয়ে বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে ক্রীড়া নৈপূণ্য দেখিয়েছেন। অনেক স্বীকৃতি-সম্মাননা অর্জন করেছেন।
১৯৭১ সালে ভারতের জলঙ্গীতে স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলে খেলেছেন। ১৯৮৬ সালে চাকুরী থেকে অবসর নেন এই কৃতী ফুটবলার।
বড় ছেলে মুন্না দাস বলেন, তাঁর বাবা তিন বার স্ট্রোক করেছেন। প্রায় ১৬ বছর ধরে অসুস্থ। খেলোয়াড় কল্যাণ তহবিল থেকে এক বার ৫ হাজার টাকা পেয়েছিলেন। আর কোন সুবিধা পাননি। নিজে নাপিতে কাজ আর ছোট ভাই বাসের হেলপারি করে সংসার চালান। লকডাউনে সেসব বন্ধ রয়েছে। এখন দিন পার করা দায় হয়ে পড়েছে।
জীবন সায়াহ্নে দুর্দিনে স্বাধীন বাংলা ফুটবলার গণেষ চন্দ্র দাসের অলস দিন কাটছে বিছানায় শুয়ে নয়তো চেয়ারে বসে। হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে অকেজো হাত-পা। কথা আড়ষ্টতায় জড়িয়ে যাচ্ছে। স্মৃতিভ্রম পেয়ে বসেছে। কখন জানি প্রাণ পাখি উড়ে যাবে, সে অপেক্ষার প্রহর গুণছেন।
ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব গনেষ চন্দ্র দাস নাটোরের লালপুরে ১৯৪৫ সালের ৪ মার্চ জন্মগ্রহণ করেন। পিতা মৃত দুর্গা চন্দ্র দাস ও মাতা মৃত শান্তি রানী দাস। স্ত্রী মায়া রানী দাস। সন্তান মুন্না চন্দ্র দাস ও পান্নু চন্দ্র দাস।
লালপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাম্মী আক্তার বলেন, ফুটবলার গণেষ চন্দ্র দাসের ব্যাপারে খেলোয়াড় কল্যান তহবিল থেকে সহায়তার উদ্যোগ নেওয়া হবে।