ঈশ্বরদী (পাবনা) সংবাদদাতাঃ
বর্তমানে বিশ্বের একমাত্র ভাসমান পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র একাডেমিক লামানোসভের দ্বিতীয় ইউনিট তার প্রথম রিফুয়েলিং এর জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। ভাসমান বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি রাশিয়ার পেভেক অঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবরাহ করছে। বিদ্যুৎ কেন্দ্রটিতে KLT-40S মডেলের দুটি রিয়্যাক্টর ব্যবহার করা হয়েছে। ইতোপূর্বে, ২০২৩ সালে বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির প্রথম ইউনিটে রিফুয়েলিং সম্পন্ন হয়। রিফুয়েলিং এর জন্য ফ্রেশ পারমাণবিক জ্বালানী প্রস্তুত ও সরবরাহ করছে রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় পরমাণু শক্তি কর্পোরেশন রসাটম।
প্রচলিত বৃহদাকারের স্থলভিত্তিক পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোতে প্রতি ১২-১৮ মাস অন্তর রিফুয়েলিং করা হয়ে থাকে। এসময় মোট জ্বালানীর একটি অংশ মাত্র পুনঃস্থাপন করা হয়। অন্যদিকে, ভাসমান পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর কম ক্ষমতা সম্পন্ন রিয়্যাক্টরগুলোতে রিফুয়েলিং করা হয় কয়েক বছর পর পর। এক্ষেত্রে পুরো রিয়্যাক্টর কোর আনলোড করে পুরো জ্বালানী প্রতিস্থাপন করা হয়। কখঞ-৪০ঝ রিয়্যাক্টর কোরে থাকে জ্বালানী এসেম্বলী, নিয়ন্ত্রন রড এবং স্টার্ট-আপ নিউট্রন উৎস।
একাডেমিক লামানোসভের দ্বিতীয় ইউনিটে রিফুয়েলিং এর জন্য প্রস্তুতকৃত জ্বালানী এসেম্বলী ইতোমধ্যে রাশিয়ার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ মেরিটাইম রেজিস্টার অফ শিপিং এর কাছ থেকে প্রয়োজনীয় অনুমোদন লাভ করেছে। এজাতীয় রিয়্যাক্টরের জন্য জ্বালানীর এক্সেপটেন্স সনদ দিয়ে থাকে এই কর্তৃপক্ষ।
বিশ্বের প্রথম ভাসমান পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র একাডেমিক লামানোসভ ২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসে গ্রীডের সঙ্গে যুক্ত হয় এবং ২০২০ সালের মে মাসে বানিজ্যিক উৎপাদন শুরু করে। কেন্দ্রটির বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা প্রায় ৭৬ মেগাওয়াট এবং তাপ উৎপাদন ক্ষমতা প্রায় ৪৪ মেগাওয়াট। পেভেক অঞ্চলের এক লক্ষ বাসিন্দার বিদ্যুৎ চাহিদা মেটাচ্ছে এই কেন্দ্রটি।
বর্তমানে বিশ্বের অনেক দেশ ক্ষুদ্র পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর ব্যাপারে আগ্রহী হয়ে উঠেছে। এর কারণগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো কম বিনিয়োগ, নির্মানে কম সময় ব্যয়, স্থানান্তরযোগ্যতা, দীর্ঘ সময় অন্তর রিফুয়েলিং এবং দূরবর্তী ও দূর্গম অঞ্চলে দূষণমুক্ত বিদ্যুৎ সরবরাহের সুবিধা।