নবেসুমির আধুনিকায়ন হলে মৌসুমে ৩ লাখ মেট্রিক টন আখ মাড়াই করা সম্ভব-এমডি ফরিদ

নাটোর প্রতিনিধি :
নাটোরের লালপুরের নর্থ বেঙ্গল সুগার মিলস লিমিটেডের (নবেসুমি) ৯২তম আখ মাড়াই মৌসুমের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ ২০২৫) দিবাগত রাত সাড়ে ১০টার দিকে মিলের কারখানা চত্ত্বরে এক দোয়া মাহফিলের মাধ্যমে চলতি (২০২৪-২০২৫) আখ মাড়াই মৌসুমের আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।
মিলের ব্যবস্থাপক (উৎপাদন) মো. শাফীকুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, এবারে মিলটি ১২৬ কর্মদিবসে মোট ১ লাখ ৯৫ হাজার ৯৪১ মেট্রিক টন আখ মাড়াই করেছে। চিনি উৎপাদন হয়েছে ১১ হাজার ৩৫০ মেট্রিক টন। চিনি আহরনের শতকরা হার ৫ দশমিক ৮০ শতাংশ। এ বছর মিলটি আখ মাড়াইয়ে গত মৌসুমের চেয়ে ৮ হাজার মেট্রিক টন বেশি আখ মাড়াই করলেও চিনি উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৩ হাজার ৬৫০ মেট্রিক টন কম করেছে।
চিনিকল সূত্রে জানা যায়, চলতি মাড়াই মৌসুমে ২ লাখ মেট্রিক টন আখ মাড়াই করে ১৫ হাজার মেট্রিক টন চিনি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। দৈনিক ১ হাজার ৭০০ মেট্রিক টন মাড়াই কর্মক্ষমতা নিয়ে ১১৭ কর্মদিবসে ১৫ হাজার মেট্রিক টন চিনি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। চিনি আহরণের হার ধরা হয়েছিল ৭ দশমিক ৫ ভাগ। কেইন কেরিয়ারে আখ ফেলে মাড়াইয়ের উদ্বোধন করেন মিলের ২০২৪ সালের ১৫ নভেম্বর ২০২৪ ৯২তম আখ মাড়াই মৌসুমের শিল্প মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান।

মহাব্যবস্থাপক (কৃষি) মো. আসহাব উদ্দিন বলেন, চলতি মৌসুমে এই মিলে ১৭ হাজার ৫০০ একর জমিতে আখ রোপন করা হয়েছিল। এর মধ্যে মিলের নিজস্ব জমি ২ হাজার ৫০০ একর। প্রতি মন আখের মূল্য মিল গেটে ২৪০ টাকা ও মিলের ৩১টি ক্রয় কেন্দ্রে ২৩৭ টাকা দেওয়া হয়। আগামী (২০২৫-২৬) মৌসুমে ১৮ হাজার একর জমিতে আখ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। যা সফল করতে ৫ হাজার ৬০০ আখচাষীর মধ্যে বীজ ও প্রায় ১২ কোটি টাকার সার বিতরণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
মিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোহাম্মদ ফরিদ হোসেন ভূঁইয়া টুটুল বলেন, এই মিল জোনে যে পরিমাণ আখ উৎপাদন হয়, তাতে মিলের আখ মাড়াই ক্ষমতা বৃদ্ধি করা দরকার। দৈনিক উৎপাদন ক্ষমতা ৩ হাজার মেট্রিক টনে উন্নীত করা সম্ভব হলে মৌসুমে ৩ লাখ মেট্রিক টন আখ মাড়াই করা সম্ভব হবে। এতে চাষীরা ধৈর্য্য হারা হবেন না। চিনির উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে ও বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হবে। চিনি আহরণের হার শতকরা লক্ষ্যমাত্রা অর্জন না হওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, চিনি আহরণের বিষয়টি প্রকৃতিগতভাবে আখের উপর নির্ভরশীল। এছাড়া দীর্ঘ ৯১ বছরের পুরাতন এই মিলটির আধুনিকায়ন করা গেলে উৎপাদন প্রক্রিয়ার ঘাটতি (প্রসেস লস) হ্রাস পাবে এবং চিনি আহরণের মাত্রা বৃদ্ধি পাবে।