বৃহস্পতিবার | ১৫ মে, ২০২৫ | ১ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২

মদ খেয়ে রেলগেট ম্যানকে মাতালের মারধর

নাটোর প্রতিনিধি:
নাটোরের লালপুরে মদ খেয়ে মাতাল হয়ে আজিমনগর রেলস্টেশন সংলগ্ন গোপালপুর রেলগেট কিপার (গেটম্যান ট্রাফিক) মো. শাফায়েত হোসেন চৌধুরীকে (৩৭) গালিগালাজ ও মারধরের ঘটনা ঘটেছে।
শনিবার (১০ মে ২০২৫) দিবাগত রাত পৌনে ১০টার দিকে লালপুর-বনপাড়া সড়কের গোপালপুর পৌরসভার রেলগেটে এ ঘটনা ঘটে বলে নিশ্চিত করেছেন আজিমনগর রেলস্টেশন মাস্টার মো. কামরুল হোসেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শনিবার রাতে মদ খেয়ে মাতাল অবস্থায় রেলগেট সংলগ্ন ডক্টর ফার্মেসিতে খাবার স্যালাইন নিতে আসেন রেলগেটের অদূরে মধুবাড়ি গ্রামের রঞ্জিত ঘোষের ছেলে বিপুল কুমার ড্রাইভার (৫৪) ও গুচ্ছগ্রামের মৃত জলিলের ছেলে আজবার আলী (৪৫)। এ সময় বিপুল ড্রাইভার এসএমসির খাবার স্যালাইনকে এসএসসি স্যালাইন পড়ায় হেসে ফেলেন গেটম্যান শাফায়েত। এতে বিপুলের সাথে থাকা আজবার ক্ষিপ্ত হয়ে গালিগালাজ করে শাফায়েতকে মারধর করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ডক্টর ফার্মেসির স্বত্বাধিকারী মিনহাজ ইসলাম।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী শাফায়েত বলেন, ওষুধের দোকানে মাতাল অবস্থায় আজবার আমাকে গালিগালাজ শুরু করলে আমি পাশেই গেটম্যানের নির্ধারিত কক্ষে চলে আসি। সেখানে জোরপূর্বক প্রবেশ করে সে আমাকে লাঠি দিয়ে মারধর করে। এ সময় আমাকে সে প্রাণ নাশের হুমকি দেয়। রোববার (১১ মে) সকাল ১১ টা পর্যন্ত আমার ডিউটি থাকায় আমি চিকিৎসা নিতে পারিনি। বিষয়টি ঈশ্বরদী জিআরপি থানাকে মৌখিকভাবে অবহিত করা হয়েছে। শীঘ্রই এ বিষয়ে থানায় অভিযোগ দায়ের করবেন।
এ ব্যাপারে অভিযুক্তদের মুঠোফোন বন্ধ থাকায় তাদের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
আব্দুলপুর জংশন রেলস্টেশন মাস্টার মো মোস্তাফিজুর রহমান নয়ন বলেন, গোপালপুর রেলগেট সংলগ্ন এলাকায় মাদকাসক্তদের উপদ্রবে রেলওয়ে কর্মচারীদের দায়িত্ব পালনে সমস্যা হচ্ছে। গত রাতের ঘটনাটি উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে অবহিত করা হয়েছে। আমরা দ্রুত এর সমাধান চাই।
এ বিষয়ে ঈশ্বরদী রেলওয়ে থানার (জিআরপি) ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জিয়াউর রহমান বলেন, ঘটনাটি শুনেছি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। লালপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) মো. মমিনুজ্জামান বলেন, বিষয়টি জানেছি। তবে অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
স্থানীয়রা মাতালদের এমন উপদ্রবে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি বলেন, সরকার স্টেশনের কাছেই একটি মদের ভাটি অনুমোদন দিয়েছে। এই ভাটিতে মদ খেয়ে মাতালরা বিভিন্ন ধরনের অপকর্ম ও অসামাজিক কার্যকলাপে জড়িয়ে পড়ে। এতে এ অঞ্চলের সামাজিক পরিবেশে চরম নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। তারা প্রশাসনের প্রতি দ্রুত মদের ভাটি ও মাদক কারখানাগুলো বন্ধের দাবি জানান।
এ ব্যাপারে সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. আজিজুল কবির বলেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মেহেদী হাসান প্রশিক্ষণে থাকায় তিনি ইউএনও-র দায়িত্বে রয়েছেন। তিনি বলেন, লালপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার সাথে আলোচনা করে দ্রুত এ বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

স্বত্ব: নিবন্ধনকৃত @ প্রাপ্তিপ্রসঙ্গ.কম (২০১৬-২০২৩)
Developed by- .::SHUMANBD::.