বিশেষ প্রতিনিধি:
আজ থেকে পাঁচ বছর পূর্বে বিশ্বের প্রথম এবং অদ্যবধি একমাত্র ভাসমান পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র ‘একাডেমিক লামানোসভ’ বানিজ্যিকভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু করে। গত পাঁচ বছর ধরে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি নির্ভরযোগ্যতার সঙ্গে নিরবিচ্ছিন্নভাবে রাশিয়ার সর্বোত্তর অঞ্চল চুকোতকা’র চন-বিলবিনো এনার্জি হাবে বিদ্যুৎ সরবরাহ করে যাচ্ছে। উল্লেখ্য, এই এনার্জী হাবটি রাশিয়ার সমন্বিত এনার্জী সিস্টেম থেকে আলাদা। রসাটমের মিডিয়া উইং এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ খবর জানিয়েছে।
গত পাঁচ বছরে ভাসমান এই বিদ্যুৎকেন্দ্রটি একের অধিক বিদ্যুৎ সরবরাহ করেছে এবং বর্তমানে চন-বিলবিনো হাবের ৬০ শতাংশের অধিক বিদ্যুৎ আসছে এই কেন্দ্রটি থেকে। প্রতি বছর চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি তার উৎপাদন ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি করছে।
ভাসমান বিদ্যুৎকেন্দ্রটিতে দু’টি KLT-40 মডেলের রিয়্যাক্টর ব্যবহৃত হচ্ছে। পারমাণবিক আইসব্রেকারেও এজাতীয় রিয়্যাক্টর ব্যবহৃত হয়। একাডেমিক লামানোসভ এর বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ৭০ মেগাওয়াট এবং তাপোৎপাদন ক্ষমতা প্রতি ঘন্টায় ৫০গিগা-ক্যালরী। কেন্দ্রটিতে থেকে উৎপাদিত এনার্জী স্থলভাগের অবকাঠামোর মাধ্যমে গ্রাহকদের কাছে পৌছে দেয়া হয়। প্রথাগত স্থলভাগের পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোতে প্রতি ১২-১৮ মাসে আংশিকভাবে জ্বালানী নতুন করে লোড করতে হয়। ভাসমান বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর সুবিধা হলো কয়েক বছর পর পর এর পুরো জ্বালানী নতুন করে পুনঃস্থাপন করলেই চলে।
KLT-40 রিয়্যাক্টরগুলো ক্ষুদ্র মডিউলার নিউকিয়ার রিয়্যাক্টর গোত্রের অন্তর্ভুক্ত, যার ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা ব্যাপক। দুর্গম এবং দূরবর্তী এলাকায় নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহে এর জুড়ি নেই। এছাড়াও যেসকল শিল্প কাস্টারে অপেক্ষাকৃত কম কিন্তু স্থিতিশীল বিদ্যুৎ সরবরাহের প্রয়োজন পড়ে, সেখানে এগুলোর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।
রাশিয়ায় অধিকাংশ লো-কার্বন বিদ্যুৎ উৎপাদন ও সরবরাহ করছে রসাটমের বিদ্যুৎ বিভাগ। এর ব্যবস্থাপনায় রয়েছে রসএনার্গোএটম। সংস্থাটি বর্তমানে ১১টি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র এবং বিশ্বের একমাত্র ভাসমান পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র পরিচালনা করছে। সংস্থাটির অধীনস্থ ৩৫টি পারমাণবিক বিদ্যুৎ ইউনিটের উৎপাদন ক্ষমতা ২৮.৫ গিগা-ওয়াট, যা রাশিয়ার মোট বিদ্যুৎ উৎপাদনের ১৯ শতাংশ।