সোমবার | ৩০ জুন, ২০২৫ | ১৬ আষাঢ়, ১৪৩২

জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হওয়ার প্রস্ততির চুড়ান্ত পর্যায়ে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র

ঈশ্বরদী (পাবনা) সংবাদদাতাঃ
বাংলাদেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎ স্থাপনা রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র বিদ্যুৎ উৎপাদনের উৎপাদনের প্রস্তুতি পর্বে গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক অর্জন করেছে। প্রথম ইউনিটের জন্য প্রধান ও সহায়ক ট্রান্সফর্মারগুলোর কমিশনিং সম্পন্ন হওয়ার ফলে জাতীয় বিদ্যুৎ গ্রিডে কেন্দ্রটি যুক্ত হওয়ার প্রস্তুতি চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে। রূপপুর পারমাণবিক নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান রসাটমের মিডিয়া উইং এবং এনপিবিসিএল এর উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হওয়ার প্রস্তুতি চূড়ান্ত পর্যায়ের খবর জানিয়েছে।

নিউক্লিয়ার পাওয়ার গ্রীড কোম্পানীর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. জাহেদুল হাসান জানান, প্রধান সেটআপ ট্রান্সফর্মারগুলোর কাজ হলো টার্বাইন জেনারেটরে উৎপাদিত ২৪ কেভি বিদ্যুৎকে ৪০০ কেভিতে রূপান্তর করা, যা জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ সঞ্চালনের জন্য অপরিহার্য। প্রতিটি ট্রান্সফর্মারের ক্যাপাসিটি ১,৫৯৯ মেগাওয়াট পর্যন্ত যা প্রথম ইউনিটে উৎপাদিত ১,২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের চেয়েও বেশি। এর ফলে নিরবিচ্ছিন্ন ও প্রয়োজনে অতিরিক্ত বিদ্যুৎ সঞ্চালন করা সম্ভব হবে। প্রতিটি ট্রান্সফর্মার ফেজের ওজন প্রায় ৪০০ টন এবং এগুলোর সংযোগ সম্পন্ন করতে ব্যবহৃত হয়েছে ১৫০ কিমি এর অধিক ক্যাবল।

এছাড়াও ইউনিটটির অভ্যন্তরীণ সকল সিস্টেমে বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য প্রয়োজনীয় সহায়ক ট্রান্সফর্মারগুলোর কমিশনিং সম্পন্ন হয়েছে। দ্বৈত মোড এ কাজ করতে সক্ষম এই ট্রান্সফর্মারগুলো জাতীয় গ্রিড এবং জেনারেটর উভয় উৎস থেকেই বিদ্যুৎ নিতে পারবে। ইতোপূর্বে অভ্যন্তরীণ সিস্টেমগুলোর জন্য ব্যবহৃত হতো স্ট্যান্ডবাই ট্রান্সফর্মার বলে জানান তিনি।

এতমস্ত্রয়এক্সপোর্টের বাংলাদেশ প্রকল্পের ভাইস-প্রেসিডেন্ট আলেক্সি ডেইরী বলেন, এটি সংশ্লিষ্ট সকল সমন্বিত প্রচেষ্টা ও নিষ্ঠার ফল। কঠিন লজিস্টিক ও জলবায়ু চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে সবাই চমৎকারভাবে কাজটি সম্পন্ন করেছে। ইউনিটির নিরাপদ ও নির্ভরযোগ্যভাবে চালুর ক্ষেত্রে এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

তিনি আরও জানান, অচিরেই রূপপুর প্রকল্পে ‘হট মিডিয়া টেস্ট’ সহ বেশ কিছু নিরাপত্তাজনিত পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালানো হবে। কোনও কোনও পরীক্ষার সময় বাষ্প নির্গমনের ফলে জনগনের কাছে অপ্রত্যাশিত শব্দ শোনা যাবে। তবে, এটি পরীক্ষারই অংশ এবং পূর্ব পরিকল্পিত। স্থানীয় বাসিন্দাদের জন্য এতে নিরাপত্তার কোনরূপ ঝুঁকি নেই। পুরো প্রক্রিয়াটি নিরাপদ। রসাটম নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে থাকে, তাই সংস্থাটির মূল লক্ষ্য হলো সকল নিয়ন্ত্রক সংস্থার নিরাপত্তা চাহিদা পূরন ও আন্তর্জাতিক মানদন্ড নিশ্চিত করা।

প্রসংগত: রাশিয়ার আর্থিক ও কারিগরী সহায়তায় বাস্তবায়নাধীন রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পে দু’টি ৩+ প্রজন্মের ভিভিইআর-১২০০ চুল্লী স্থাপিত হয়েছে। প্রতিটির উৎপাদন ক্ষমতা ১,২০০ মেগাওয়াট। রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় সংস্থা রসাটমের প্রকৌশল বিভাগ মোট ২,৪০০ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন বিদ্যুৎকেন্দ্রটির জেনারেল কন্ট্রাকটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করছে।

স্বত্ব: নিবন্ধনকৃত @ প্রাপ্তিপ্রসঙ্গ.কম (২০১৬-২০২৩)
Developed by- .::SHUMANBD::.