নাটোর প্রতিনিধি:
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপির) আহবায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, দেশের মৌলিক সংস্কার প্রয়োজন, সবাই তরুণ সমাজের কাছে পাশে দাঁড়ান। আমরা বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়তে সমর্থ্য হব। তাই আগামী ৩ আগস্ট জাতীয় শহীদ মিনারে আমাদের ইশতেহার ঘোষণা করবো। জুলাই অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র ও বিচার সংস্কার ছাড়া দেশে কোন নির্বাচন হবে না। জুলাই গণঅভ্যুত্থানকে সাংবিধানিক স্বীকৃতি ও জুলাই ঘোষণাপত্র দিতে হবে।
তিনি বলেন, বৈষম্যহীন দূর্নীতিমুক্ত একটি বাংলাদেশ গড়ার আকাক্সক্ষা ছিল দেশের গণমানুষ ও ছাত্র সমাজের। কিন্তু ৫ আগস্টের পর থেকে সেই আকাক্সক্ষা থেকে কিছু পক্ষ সরে গিয়েছে। আজকেও আমাদের অনুষ্ঠানকে বানচাল করতে নানা ধরনের বাধা ও ষড়যন্ত্র করা হয়েছিল।
সোমবার (৭ জুলাই ২০২৫) নাটোরের পথসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, এক সময় যারা ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য এ ধরনের কর্মকান্ড করতো তারা আজ কোথায়? ফ্যাসিস্টদের কাছ থেকে শিক্ষা না নিলে এখন যারা এসব কর্মকান্ড করছেন তাদের অবস্থা আরো ভয়াবহ হবে বলে হুশিয়ারী করেন তিনি।
বেলা আড়াইটার দিকে রাজশাহী থেকে সড়ক পথে নাটোরে এসে পৌঁছান দলের আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, সদস্য সচিব আখতার হোসেন, মুখ্য সমন্বয়ক নাসির উদ্দিন পাটোয়ারী, উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সমন্বয়ক সারজিস আলম, দক্ষিনাঞ্চলের মুখ্য সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহসহ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ।
জুলাই আন্দোলনের এসব নেতাদের নাটোর-রাজশাহী সীমান্ত এলাকা থেকে নাটোরের নেতাকর্মীরা ফুলের শুভেচ্ছা জানিয়ে নাটোরে স্বাগত জানান।
শহরের স্টেশন বাজার থেকে পায়ে হেটে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে দুপুর আড়াইটার দিকে শহরের মাদরাসা মোড় স্বাধীনতা চত্বরে পথসভায় মিলিত হন। জুলাই পথযাত্রার এই পথসভায় উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলমের সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন- এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, সদস্য সচিব আখতার হোসেন, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন, যুগ্ম আহ্বায়ক ডা. তাজনুভা জাবীন, কেন্দ্রীয় এনসিপির সদস্য আসিফ মোস্তফা জামাল, নাটোর জেলা এনসিপির প্রধান সমন্বয়কারী অধ্যক্ষ জার্জিস কাদির ও সিনিয়র যুগ্ম সমন্বয়কারী নাটোর চেম্বারের সভাপতি আব্দুল মান্নাফ প্রমুখ।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন- এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্য সচিব নাহিদা শারওয়ার নিভা, দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ, মুখ্য সমন্বয়ক নাসির উদ্দীন পাটোয়ারী, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্য সচিব ডা. তাসনিম জারাসহ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে নাহিদ ইসলাম আরও বলেন, নাটোরের আটজন শহীদ রয়েছেন। তারা গণঅভ্যুত্থানে দেশকে ফ্যাসীবাদ মুক্ত করতে নিজেদের জীবন বিলিয়ে দিয়েছিলেন। স্বৈরাচারের কবল থেকে দেশকে মুক্ত করে নতুন করে স্বাধীনতা এনে দিয়েছিলেন। আমরা সেই শহীদের শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করি। শহীদরা যে আকাক্সক্ষার জন্য, নতুন বাংলাদেশের জন্য জীবন দিয়েছিলেন আমরা যেন নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণ করতে পারি, সেটাই আমাদের লক্ষ্য। বাংলাদেশের মৌলিক কাঠামোতে যদি হস্তক্ষেপ করা হয়, মৌলিক সংস্কারে বাঁধা দেওয়া হয় তাহলে প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
পথসভা শেষে শহীদ ও আহত পরিবারের সদস্যদের সাথে মতবিনিময় করে বিকেলে সিরাজগঞ্জের উদ্দেশ্যে রওনা হয় জুলাই পদযাত্রার গাড়ি বহর।
এদিকে নাটোরের বনপাড়ায় এনসিপির নেতারা আসলে দেখে নেওয়া হবে বলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হুমকি দিলে নাশকতার আশংকায় রোববার খোরশেদ আলম নামে একজনকে আটক করে নাটোরের গোয়েন্দা পুলিশ। অপরদিকে এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতাদের নাটোরে আগমনে শুভেচ্ছা জানিয়ে শহরের লাগানো অনেক ব্যানার ফেস্টুন রোববার গভীর রাতে সন্ত্রাসীরা ছিঁড়ে ফেলে। নাটোর ষ্টেশন বাজার ও নবাব সিরাজ-উদ-দৌলা সরকারি কলেজ এলাকায় এসব ব্যানার ফেস্টুন নষ্ট করা হয় বলে জানা গেছে।