বিশেষ প্রতিনিধি:
মধ্য এশিয়ার দেশ কাজাখস্থান একটি উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মানের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করেছে। প্রকল্প বাস্তবায়নে সহায়তা করছে রাশিয়া। গত সপ্তাহে দেশটির আলমাতি অঞ্চলের হামবিল জেলায় এলক্ষ্যে প্রাথমিক কাজ বিশেষ করে প্রকৌশল জরিপ শুরু হয়েছে। এই জরিপের ফলাফলের উপর ভিত্তি করে বিদ্যুৎকেন্দ্রটির জন্য উপযুক্ত সাইট নির্বাচন এবং ভবিষ্যৎ প্রকল্পের ডিজাইন ডকুমেন্ট তৈরি হবে। রসাটমের মিডিয়া উইং থেকে পাঠানো এক প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে এ খবর জানানো হয়েছে।
প্রাথমিক কাজের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রসাটমের মহাপরিচালক আলেক্সি লিখাচেভ, কাজাখস্থান এটমিক এজেন্সীর চেয়ারম্যান আলমাসাদাম সাতকালিয়েভ এবং আলমাতি’র আকিম মারাত সুলতান গাজিয়েভ।
রসাটম প্রকৌশল বিভাগের বিশেষজ্ঞরা প্রাথমিক কাজের অংশ হিসেবে সাইটের বোরিং এবং মাটির স্যাম্পলিং শুরু করেছেন। এর মাধ্যমে ভবিষ্যৎ প্রকল্পটির ভূমিকম্প সহনশীলতাসহ সাইটের হাইড্রোজিওলজিক্যাল বৈশিষ্ট্য ও অন্যান্য প্যারামিটার বিবেচনা করা হবে, যা বিদ্যুৎকেন্দ্রের নিরাপত্তা এবং নির্ভরযোগ্যতার জন্য অত্যন্ত জরুরী। মোট ৬০টি স্থানে ৩০-১২০মিটার গভীরে বোরিং করার পরিকল্পনা রয়েছে। ভবিষ্যৎ বিদ্যুৎকেন্দ্রটির চূড়ান্ত সাইট নির্বাচন এসকল পরীক্ষা-নিরীক্ষার উপর ভিত্তি করে করা হবে।
আন্তর্জাতিক এবং জাতীয় মানদন্ড নিশ্চিতকরণ, পরিবেশগত ও প্রযুক্তিগত ঝুঁকি ন্যুনতম পর্যায়ে নামিয়ে আনা এবং ভবিষ্যৎ বিদ্যুৎকেন্দের জন্য একটি কার্যকরি ডিজাইন প্রস্তুতের ক্ষেত্রে এই জরিপ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
প্রাথমিক কাজের উদ্বোধন উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে আলেক্সি লিখাচেভ বলেন, “প্রকৌশল জরিপ শুরুর মধ্য দিয়ে কাজাখস্থানের আধুনিক ইতিহাসে একটি উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মানের পথে যাত্রার সূচনা হলো। এপর্যায়ে আমরা সাইটের সার্বিক জরিপ পরিচালনার মাধ্যমে ভবিষ্যৎ বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য এটি উপযোগী কিনা সে ব্যাপারে পুরোপুরি নিশ্চিত হতে পারবো। রসাটম তার সকল সঞ্চিত অভিজ্ঞতা প্রয়োগ করতে প্রস্তুত আছে, যাতে কাজাখস্থান তার নিজস্ব উন্নয়নের স্বার্থে এমন একটি কৌশলগত প্রকল্প সফলভাবে বাস্তবায়ন করতে সক্ষম হয়”।
রসাটম জানায়, কাজাখস্থানের প্রস্তাবিত পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রটি সর্বাধুনিক ৩+ প্রজন্মের ভিভিইআর-১২০০ রিয়্যাক্টরের ভিত্তিতে নির্মিত হবে। এই প্রযুক্তি অত্যন্ত কঠিন সকল আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা চাহিদা পূরণে সক্ষম। বাংলাদেশ, রাশিয়া, বেলারুশ, তুরস্ক এবং চীনে এজাতীয় প্রকল্প হয় ইতোমধ্যে সফলভাবে কাজ করছে অথবা বাস্তবায়নের পর্যায়ে রয়েছে। এই রিয়্যাক্টরের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো এর সূদীর্ঘ জীবনকাল যা প্রায় ৬০ বছর এবং প্রয়োজনে তা আরো ২০ বছর পর্যন্ত দীর্ঘায়িত করা সম্ভব।
অনুষ্ঠানে রাশিয়ার লেনিনগ্রাদ এনপিপি, তুরস্কের আকুইয়ু এনপিপি, বেলারুশ এনপিপি, হাঙ্গেরীর পাকস-২ এনপিপি এবং বাংলাদেশ রূপপুর এনপিপি’র কর্মকর্তারা স্থানীয় জনগনের উদ্দেশ্য বক্তব্য রাখেন। উল্লেখ্য, এসকল প্রকল্পে ভিভিইআর-১২০০ রিয়্যাক্টর ব্যবহৃত হচ্ছে বা ব্যবহারের অপেক্ষায় রয়েছে।