রাশিদুল ইসলাম রাশেদ, নিজস্ব প্রতিবেদক:
“টাইফয়েড জ্বর প্রতিরোধে টিকা নেবো দল বেঁধে” স্লোগানে নাটোরের লালপুরে উপজেলার প্রাক-প্রাথমিক থেকে নবম শ্রেণি বা সমমানের শিক্ষার্থীসহ ৯ মাস থেকে ১৫ বছরের কম বয়সী ৭৫ হাজার ৭৫৪ জন শিশু ও কিশোর-কিশোরীর জন্য “টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইন – ২০২৫” এর উদ্বোধন করা হয়েছে। আজ সকালে লালপুর শ্রী সুন্দরী পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে মাসব্যাপী এ ক্যাম্পেইনের উদ্বোধন করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মেহেদী হাসান।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. মুনজুর রহমান, লালপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রফিকুল ইসলাম, একাডেমিক সুপারভাইজার সাদ আহমদ শিবলী সহ টিকাদান কার্যক্রমে যুক্ত স্বাস্থ্যকর্মীরা। এ সময় ইউএনও মো. মেহেদী হাসান জানান, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচি (ইপিআই)-এর আওতায় সম্পূর্ণ বিনামূল্যে এই টিকা প্রদান করা হচ্ছে। টিকা গ্রহণের উপযোগী সকল শিশুকে টাইফয়েড প্রতিরোধে টিকা গ্রহণের আহব্বান জানিয়ে তিনি বলেন, বিদ্যালয় ভিত্তিক বা নিকটস্থ ইপিআই টিকাদান কেন্দ্রে গিয়ে টিকা নেওয়া যাবে।
লালপুর উপজেলার ৩১৩টি প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বা সমমানের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ২৪০টি অস্থায়ী টিকাদান কেন্দ্র ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১২ অক্টোবর থেকে শুরু হয়ে ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত মাসব্যাপী এ টিকাদান ক্যাম্পেইন চলবে।
উল্লেখ্য, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ১২ অক্টোবর থেকে ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত, কমিউনিটি টিকাদান কেন্দ্রগুলোতে ১’লা নভেম্বর থেকে ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত এবং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্থায়ী টিকাদান কেন্দ্রে সরকারি ছুটির দিন ব্যতীত প্রতিদিন টিকাদান কার্যক্রম চলবে। যে শিক্ষার্থী বিদ্যালয়ে নির্ধারিত দিনে অনুপস্থিত থাকবে, সে ক্যাম্পেইন চলাকালীন সময়ে নিকটস্থ ইপিআই টিকাদান কেন্দ্র থেকে টিকা নিতে পারবে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. মুনজুর রহমান বলেন, বাংলাদেশে সংক্রামক রোগগুলোর মধ্যে অন্যতম টাইফয়েড জ্বর। “স্যালমোনেলা টাইফি” নামের ব্যাকটেরিয়ার মাধ্যমে দূষিত পানি ও খাবার থেকে এই রোগ ছড়ায়। টাইফয়েডে আক্রান্তদের প্রায় ৬১ শতাংশ ও মৃত্যুবরণকারীদের প্রায় ৬৮ শতাংশের বয়স ১৫ বছরের কম। তাই আগামী প্রজন্মকে সুস্থ ও নিরাপদ রাখতে সারাদেশে প্রায় ৪ কোটি ৯২ লাখ শিশুকে এই টিকা দেওয়া হবে।
তিনি আরও জনান, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) অনুমোদিত টাইফয়েড প্রতিরোধে টিসিভি (Typhoid Conjugate Vaccine) অত্যন্ত নিরাপদ ও কার্যকর। টিকা নেওয়ার পর কারো কারো ক্ষেত্রে টিকা দেওয়ার স্থানে ব্যথা, হালকা জ্বর বা ফুলে যাওয়ার মতো সামান্য প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে যা সম্পূর্ণ স্বাভাবিক এবং অস্থায়ী। এ নিয়ে ভয়ের কিছু নেই। তবে কেউ যদি বর্তমানে জ্বরে ভোগে বা টাইফয়েডে আক্রান্ত থাকে, তাহলে টিকা নেওয়া যাবে না। সম্পূর্ণ সুস্থ হওয়ার পর তাকে টিকা নিতে হবে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা :
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনায় বলা হয়েছে যে, টিকা পেতে vaxepi.gov.bd তে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। তবে যে সকল শিক্ষার্থীরা প্রাক প্রাথমিক-৯ম শ্রেণিতে অধ্যয়নরত কিন্তু বয়স ১৫ বছরের উপরে হওয়ার কারণে টাইফয়েড টিকা রেজিস্ট্রেশন করে কার্ড ডাউনলোড করতে পারছে না , শুধু সে সকল শিক্ষার্থীদের জন্য প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে হোয়াইট লিস্টের আবেদন করতে হবে। আবেদনটি অবশ্যই https://cutt.ly/vaxepiword লিংকে প্রদত্ত ছকে মাইক্রোসফট ওয়ার্ড (Microsoft word, doc, docx) ফাইল এ পূরণ করে প্রতিষ্ঠানের ইমেইল থেকে [email protected] তে ই-মেইল করতে হবে।
এছাড়া 📞 স্বাস্থ্য বাতায়ন: ১৬২৬৩ ও 🌐 ওয়েবসাইট: www.vaxepi.gov.bd থেকে বিস্তারিত তথ্য জানা যাবে।