
আনোয়ারা খাতুন শেফালী :
৫৮ নাটোর-১ (লালপুর-বাগাতিপাড়া) আসনে বিএনপির মনোনয়ন পেয়েছেন নাটোর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ফারজানা শারমিন পুতুল। তিনি সাবেক প্রতিমন্ত্রী মরহুম ফজলুর রহমান পটলের ছোট মেয়ে।
সোমবার (৩ নভেম্বর ২০২৫) সন্ধ্যায় বিএনপির দলীয় কার্যলয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নাটোর-১ আসনে ধানের শীর্ষ প্রতীকে ব্যারিস্টার ফারজানা শারমিন পুতুলের নাম ঘোষণা করেন।
মনোনয়ন ঘোষনার পর প্রতিক্রিয়ায় ফারজানা শারমিন পুতুল বলেন, ‘আমি উন্নয়নমূলক কাজ দুই ভাগে করতে চাই। প্রথমত, এলাকায় রাজনৈতিক চাপ দিয়ে বিভিন্ন ক্ষেত্রে তদবিরের মাধ্যমে পদায়ন, চাকরিতে নিয়োগবাণিজ্য বন্ধ করে যোগ্যতা সম্পন্ন মানুষের চাকরি নিশ্চিত করব। দ্বিতীয়ত, মাদক ও অবৈধ অস্ত্র ব্যবহার বন্ধ করে তরুণ সমাজকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করব। এছাড়া লালপুরের জন্য খুবই বাজে একটি অভিজ্ঞতা হলো ইমু হ্যাকিংয়ের সাথে জড়িত থাকা। টাকার লোভ দেখিয়ে তরুণদের মধ্যে যাদেরকে ইমু হ্যাকিংয়ে ঠেলে দেওয়া হয়েছে আমি তাদের পুনর্বাসন করব। ৩১ দফার পাশাপাশি বাবার রেখে যাওয়া অসম্পন্ন কাজ- যেমন রাস্তাঘাট, স্টেডিয়াম সংস্কার, নারীর ক্ষমতায়ন করে তাদের সাবলম্বী করার জন্য বিভিন্ন প্রকল্প গ্রহণ করব। নর্থ বেঙ্গল সুগার মিলের আধুনিকায়ন এবং আখচাষীদের লোকসানের হাত থেকে রক্ষা করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে। ২০১৬ সালে বাবা মারা যাওয়ার পর থেকে রাজনীতিতে সক্রিয় হয়েছি। বাবার সাথে যারা রাজনীতি করেছেন তাদের আগলে রেখেছি। যারা এদিক-ওদিক আছেন তাদেরকে সঙ্গে নিয়ে সামনে পথ চলতে চাই।’
জীবনবৃত্তান্ত:
নাটোরের লালপুরের গৌরীপুরে ১৯৮৪ সালের ২ নভেম্বর জন্মগ্রহণ করেন ফারজানা শারমিন পুতুল। পিতা মো. ফজলুর রহমান পটল (৫৮-নাটোর-১ (লালপুর-বাগাতিপাড়া) আসন থেকে চার মেয়াদের সংসদ সদস্য ও নাটোর জেলার প্রথম মন্ত্রী) এবং মাতা কামরুন্নাহার শিরিনের (সাবেক অধ্যক্ষ)। তিনি ২০০৯ সালের ১৬ জুলাই এইচ এম বাররু সানির সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। তাঁদের সন্তান নাযাহ।
তিনি ঢাকা ভিকারুন্নেছা নুন স্কুল ও কলেজে পড়াশুনা করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন বিষয়ে ২০০৬ সালে স্নাতক (সম্মান) ও ২০০৭ সালে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। পরবর্তীতে লন্ডনের বিপিপি ইউনিভার্সিটি ল’ স্কুল/কলেজ থেকে ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস ল’ বিষয়ে ২০১১ সালে স্নাতক ও ২০১২ সালে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। ব্যারিস্টার ডিগ্রি অর্জন করেন।
তিনি আইনজীবী ও রাজনীতিবিদ এবং বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী, বিএনপির ও জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতাদের অন্যতম, সাবেক সাংসদ ও অষ্টম জাতীয় সংসদের আইন ও বিচার বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদের ‘মওদুদ আহমেদ এন্ড এসোসিয়েটস’-এ আইন পেশায় যুক্ত ছিলেন। বর্তমান নিজস্ব ‘রাইটস চেম্বারস’ ঢাকা হাইকোর্ট ও সুপ্রীম কোর্টের একজন আইনজীবী হিসেবে কর্মরত।
তিনি বিএনপির মানবাধিকার বিষয়ক কমিটির সদস্য, বিএনআরসি এডিটরিয়াল বোর্ডের সদস্য। ২০২৩ সালের ৮ অক্টোবর তাঁকে বিএনপি মিডিয়া সেলের সদস্য হিসেবে অন্তর্ভূক্ত করা হয়। তিনি ২০২৪ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন ঢাকার মহাখালির ক্যাপিটাল ল’ কলেজের এডহক কমিটির সভাপতি নিযুক্ত হন। তিনি মন্ত্রীপরিষদ বিভাগের ২০২৪ সালের ৩ অক্টোবর প্রজ্ঞাপনে ‘দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কার কমিশন’ এর সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি ২০২৫ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি নাটোর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মনোনীত হন।