
প্রাপ্তি প্রসঙ্গ ডেস্ক :
রাজশাহীর তানোরে গভীর গর্তে পড়ে ৩২ ঘণ্টা পর উদ্ধার হওয়া দুই বছরের শিশু সাজিদ আর বেঁচে নেই। তানোর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসকের বরাত দিয়ে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (অপারেশন অ্যান্ড মেইনটেন্যান্স) লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।
বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে কোয়েল হাট পূর্বপাড়া এলাকা থেকে শিশুটিকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিসের অ্যাম্বুলেন্সে করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। চিকিৎসকেরা পরীক্ষা করে জানান, শিশুটি মারা গেছে।
এর আগে উদ্ধার প্রক্রিয়া শেষে লেফটেন্যান্ট কর্নেল তাজুল ইসলাম বলেন, ‘রাত ৯টার দিকে আমরা শিশুটিকে অচেতন অবস্থায় পেয়েছি। হাসপাতালে নেওয়ার পর তার শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে চিকিৎসকেরা বিস্তারিত জানান।’
প্রত্যক্ষদর্শী ও ফায়ার সার্ভিস সূত্র জানায়, দীর্ঘসময় ধরে উদ্ধার অভিযান চললেও ঘটনাস্থলে কোনো চিকিৎসক দল ছিল না। তবে শুরু থেকেই একটি অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত রাখা ছিল। উদ্ধার হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই শিশুটিকে হাসপাতালে নেওয়া হয়।
গত বুধবার বেলা একটার দিকে মায়ের সঙ্গে মাঠে গিয়ে গর্তে পড়ে যায় সাজিদ। সে পূর্বপাড়া গ্রামের রাকিবুল ইসলামের ছেলে। স্থানীয়রা জানান, কোয়েল হাট এলাকায় ভূগর্ভস্থ পানির স্তর খুব নিচে নেমে যাওয়ায় গভীর নলকূপ বসানো নিষিদ্ধ। এরপরও গ্রামের কছির উদ্দিন নিজ জমিতে পানির স্তর যাচাই করতে গর্ত খনন করেছিলেন। বর্ষায় মাটি বসে গিয়ে আবার সেই গর্ত উন্মুক্ত হয়ে পড়ে।
শিশুটি সেখানে পড়ে গেলে বুধবার দুপুর আড়াইটার দিকে ফায়ার সার্ভিস উদ্ধার অভিযান শুরু করে। আটটি ইউনিট অংশ নেয় অভিযানে। সন্ধ্যার পর এক্সকাভেটর দিয়ে মূল গর্তের পাশ থেকে মাটি কেটে খনন শুরু হয়। ৪৫ ফুট গভীর পর্যন্ত খনন করে অবশেষে উদ্ধার করা হয় সাজিদকে।
এদিকে শিশুর মা রুনা খাতুন শোকে ভেঙে পড়েন। তিনি দাবি করেন, কছির উদ্দিন তিন জায়গায় গভীর গর্ত খুঁড়ে বছর ধরে সেগুলো ভরাট করেননি। কছিরকে শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানান তিনি। ঘটনার পর কছির একবার এলেও পরে আর দেখা যায়নি বলে জানান রুনা।
তানোর থানার ওসি মো. শাহীনুজ্জামান বলেন, ‘আমরা ঘটনাটি তদন্ত করছি। কছির উদ্দিনের অবস্থান আমরা পাইনি।’ তাঁকে গ্রেপ্তার করা হবে কি না—জানতে চাইলে ওসি বলেন, ‘তদন্তের পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’