রবিবার | ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ | ২৯ অগ্রহায়ণ, ১৪৩২

নিউক্লিয়ার বাস ট্যুরে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম

ঈশ্বরদী (পাবনা) সংবাদদাতাঃ

ফুয়েল লোডিংয়ের প্রাক্কালে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রকে ঘিরে জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে পাবনা জেলায় ‘নিউক্লিয়ার বাস ট্যুর’ আয়োজন করা হয়েছে। সাধারণ মানুষের কাছে সঠিক, প্রয়োজনীয় ও তথ্যভিত্তিক ধারণা পৌঁছে দিতে বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন (বিএইসি) ও রোসাটম মাসব্যাপী বিভিন্ন প্রচারণামূলক কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে।

এ কর্মসূচির আওতায় নিউক্লিয়ার বাস ট্যুরের পাশাপাশি পারমাণবিক প্রযুক্তি বিষয়ক বিতর্ক প্রতিযোগিতা, সাংস্কৃতিক আয়োজন ‘গম্ভীরা’ এবং স্থানীয় জনগণের সঙ্গে সরাসরি মতবিনিময়মূলক কার্যক্রম ‘উঠান বৈঠক’ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক তথ্য কর্মকর্তা ও গণমাধ্যম ফোকাল পয়েন্ট সৈকত আহমেদ রোববার (১৪ ডিসেম্বর) এক প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানান।

রোববার ঈশ্বরদী বাস টার্মিনালে নিউক্লিয়ার বাস ট্যুর কার্যক্রমে বিপুল জনসমাগম দেখা যায়। এর আগে গত ১০ ডিসেম্বর থেকে পাঁচ দিনব্যাপী এ বাস ট্যুর শুরু হয়। পাবনা জেলার সব উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ স্থানে এই কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। এর মাধ্যমে স্থানীয় জনগণের মধ্যে প্রকল্পকে ঘিরে বিদ্যমান নানা প্রশ্ন, ভুল ধারণা, উদ্বেগ ও কৌতূহল দূর করতে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র সম্পর্কে সহজ, স্পষ্ট ও নির্ভরযোগ্য তথ্য উপস্থাপন করা হচ্ছে।

সৈকত আহমেদ জানান, নিউক্লিয়ার বাস ট্যুরের মাধ্যমে পাবনা জেলার সব উপজেলার সাধারণ মানুষ সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞ ও প্রতিনিধিদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলার সুযোগ পাচ্ছেন। এতে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের নিরাপত্তা ব্যবস্থা, পরিবেশগত দিক, আধুনিক প্রযুক্তি এবং আর্থ-সামাজিক গুরুত্ব সম্পর্কে তারা বিস্তারিতভাবে জানতে পারছেন।

তিনি আরও জানান, পারমাণবিক তথ্য কেন্দ্র এবং পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের যৌথ আয়োজনে শনিবার পারমাণবিক প্রযুক্তি বিষয়ক বিতর্ক ও প্রশ্নোত্তর পর্ব অনুষ্ঠিত হয়। এ অনুষ্ঠানে ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ছাড়াও বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন ও রোসাটমের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

এছাড়াও চলতি মাসে আরও দুটি উল্লেখযোগ্য প্রচারণামূলক কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে বলে জানান তিনি। এর মধ্যে রয়েছে সাংস্কৃতিক পরিবেশনা ‘গম্ভীরা’, যার মূল প্রতিপাদ্য— ‘স্বপ্ন পূরণে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র’, এবং স্থানীয় জনগণের সক্রিয় অংশগ্রহণে একাধিক ‘উঠান বৈঠক’। ‘টেকসই, নিরাপদ, সাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র’— এই মূলভাবকে কেন্দ্র করে নির্মিত গম্ভীরা পরিবেশনার মাধ্যমে বিনোদনের পাশাপাশি যুক্তিনির্ভর উপায়ে রূপপুর প্রকল্পের প্রয়োজনীয়তা ও গুরুত্ব তুলে ধরা হবে।

‘উঠান বৈঠক’-এর মাধ্যমে স্থানীয় জনগণকে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র সম্পর্কে আরও সচেতন ও অবহিত করা হচ্ছে। এসব সরাসরি আলোচনায় বিভিন্ন প্রশ্নের তথ্যভিত্তিক উত্তর প্রদান করে মানুষের উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা দূর করার পাশাপাশি প্রকল্পের পক্ষে ইতিবাচক জনমত গড়ে তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

সৈকত আহমেদ বলেন, বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন ও রোসাটম বিশ্বাস করে— ধারাবাহিক ও অংশগ্রহণমূলক জনসচেতনতা কার্যক্রমের মাধ্যমে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র সম্পর্কে জনগণের আস্থা আরও সুদৃঢ় হবে এবং দেশের টেকসই উন্নয়নে এ প্রকল্পের ভূমিকা সম্পর্কে একটি স্পষ্ট ও ইতিবাচক ধারণা তৈরি হবে।

উল্লেখ্য, ফুয়েল লোডিং সম্পন্ন হওয়ার মধ্য দিয়ে অতি শিগগিরই রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু হতে যাচ্ছে। চালু হলে জাতীয় গ্রিডে প্রায় ২ হাজার ৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ যুক্ত হবে, যা দেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন ও জ্বালানি নিরাপত্তায় একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হবে।

স্বত্ব: নিবন্ধনকৃত @ প্রাপ্তিপ্রসঙ্গ.কম (২০১৬-২০২৩)
Developed by- .::SHUMANBD::.