নাটোর প্রতিনিধি :
নাটোরের লালপুরে প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের মাঝে ১৩০টি কম্বল ও সুয়েটার বিতরণ করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৬ জানুয়ারি ২০২৪) উপজেলার ছায়া প্রতিবন্ধী ও অটিস্টিক বিদ্যালয়ে জেএলআর ট্রাস্টের সহায়তায় শীতবস্ত্র বিতরণ করেন প্রধান অতিথি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও প্রতিষ্ঠানের সভাপতি শারমিন আখতার।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সিমানুর রহমানের সভাপতিত্বে ও সঞ্চালনায় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. আরিফুল ইসলাম, বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য ইসমাইল হোসেন, অধ্যক্ষ ইমাম হাসান মুক্তি, আসলাম উদ্দীন, আব্দুল মানান, দুলাল উদ্দীন প্রমুখ।
নিষ্পাপ প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ সাফিন মুখে কথা না বলতে পারে না। নিজের মনের কথা বুঝাতে না পারলেও মিষ্টি হাসি ও চোখের ইশারায় প্রমাণ করেছে কম্বল পাওয়ার আনন্দ।
মিটি মিটি চোখে তাকিয়ে আছে একটি ছোট্ট শিশু মুখে প্রাণবন্ত হাসি নিয়ে বসে আছে কম্বল নিয়ে। বাকশক্তি না থাকলেও চোখ ও হাতের ইশারাতেই বোঝা যায় মুখের মিষ্টি হাসি প্রমাণ করছে কনকনে শীতে উষ্ণতার আনন্দ।
প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী বিজয়ের মা ময়না বেগম বলেন, কম্বল পেয়ে আমার ছেলের অনেক উপকার হলো। জেএলআর ট্রাস্ট প্রচণ্ড শীতে এ সহযোগিতা করায় কৃতজ্ঞতা জানান তিনি।
ইউএনও শারমিন আখতার বলেন, সামর্থ্য অনুযায়ী সকলে সমাজের অসহায় দরিদ্র শীতার্ত মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারি। বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহবান জানিয়ে বলেন, নিজ নিজ এলাকায় তাঁরা এগিয়ে এলে অসহায় দরিদ্র শীতার্ত মানুষগুলো উপকৃত হবে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সিমানুর রহমান জানান, ছায়া প্রতিবন্ধী ও অটিস্টিক বিদ্যালয় ২০১২ সাল থেকে বিশেষচাহিদা সম্পন্ন শিশু/ব্যক্তিদের শিক্ষা, চিকিৎসা, প্রশিক্ষণ ও পূণর্বাসনের লক্ষে প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের সুপ্ত প্রতিভার বিকাশ, প্রশিক্ষণের মাধ্যমে আত্মবিশ্বাস ও স্বক্ষমতা বাড়ানো, স্বনির্ভর জীবনযাপনের প্রশিক্ষণ দিয়ে, সমাজের মূলস্রোতধারায় সম্পৃক্ত করার লক্ষ্য নিয়ে উপজেলার একমাত্র বিশেষায়িত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি সম্পূর্ণ বিনাপারিশ্রমিকে সুনামের সাথে অদ্যাবদি পরিচালিত হয়ে আসছে।
বিদ্যালয়টির যাত্রা শুরু হয় একটি ভাড়া বাড়িতে দুইজন শিক্ষার্থী নিয়ে। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানে ২৯১ জন বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিক্ষার্থী, নিজস্ব ৪৪ শতাংশ জমি, নিজস্ব অর্থায়নে নির্মিত একটি ভবন, বাংলাদেশ ব্যাংক ও জেএলআর ট্রাস্ট কর্তৃক র্যাম্পযুক্ত প্রতিবন্ধীবান্ধব দ্বিতল ভবন, যুগোপযোগি ক্লাসরুম, অটিজম কর্ণার, প্রশিক্ষণ রুম, সার্বক্ষণিক বিদ্যুৎ ব্যবস্থা, প্রতিবন্ধী বান্ধব শিশু পার্ক, খেলার মাঠ, র্যাম্পযুক্ত শহীদ মিনার, শেখ রাসেল ডিজিটাল কম্পিউটার ল্যাব, বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষাবোর্ড কর্তৃক অনুমদিত কম্পিউটার ও সেলাই প্রশিক্ষণ সেন্টার, আধুনিকমানের ফিজিওথেরাপি সেন্টার, অত্যাধুনিক গেস্টরুম, রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের একমাত্র ব্যাচেলর অব স্পেশাল এডুকেশন কলেজ ও থেরাপি ডিপ্লোমা প্রতিষ্ঠান (প্রক্রিয়াধীন) রয়েছে।
এই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন খেলাধুলা, ছবি অংকন সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডে স্থানীয় ও জাতীয় ক্রীড়াঙ্গনে স্পেশাল অলিম্পিকসহ বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে জেলা, বিভাগীয় ও জাতীয়ভাবে চ্যাম্পিয়ান হওয়ার গৌরব অর্জন করেছে।