নাটোর প্রতিনিধি :
নাটোরের লালপুরে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সদস্য মো. মোজাহার আলীকে (৪৫) লক্ষ্য করে প্রকাশ্যে গুলি চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা। তবে অল্পের জন্য প্রাণে রক্ষা পেয়েছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ ২০২৫) বিকেল সোয়া ৪টার দিকে লালপুর উপজেলার ঈশ্বরদী ইউনিয়নের পালিদহ গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
উপজেলার ঈশ্বরদী ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. মোজাহার আলী দুর্বৃত্তদের গুলির লক্ষ্যবস্তু হলেও ভাগ্যক্রমে রক্ষা পেয়েছেন। তিনি ওই গ্রামের মৃত বাহার আলীর ছেলে।
প্রত্যক্ষদর্শী জাহাঙ্গীর সরকার (৫৬) বলেন, দুইটি মোটরসাইকেলে ছয়জন লোক এসে মোজাহার মেম্বারের বাড়ির সামনে থামেন। এরপর তাকে লক্ষ্য করে কয়েক রাউন্ড গুলি ছোঁড়েন। তখন মোজাহার ‘বাঁচাও-বাঁচাও’ বলে চিৎকার করলে আমি দৌড়ে যাই। একটি মোটরসাইকেল ধরে ফেলতে চেষ্টা করি। কিন্তু ধাক্কা খেয়ে পড়ে যাই। পরে সেই মোটরসাইকেল থেকে তিনজন নেমে পালিয়ে যায়।
স্থানীয়রা জানান, দুটি মোটরসাইকেলে অজ্ঞাতনামা ৬ জন এসে মো. মোজাহার আলী মেম্বারের বাড়ির সামনে আসেন। এ সময় তাঁকে দেখে একজন পিস্তল বের করলে বিষয়টি দেখতে পেয়ে মোজাহার আলী তাঁর মোটরসাইকেল ফেলে চিৎকার করে তাৎক্ষণিক দৌড় দিয়ে পালিয়ে যান। চিল্লাচিল্লির একপর্যায়ে এলাকার লোকজন লাঠি সোটা নিয়ে আসলে ঘটনাস্থলে রেজিস্ট্রেশন বিহীন একটি ১৫০ সিসি পালসার কালো রঙের মোটরসাইকেল ফেলে রেখে কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি করে পালিয়ে যান। তাঁরা আরও জানান, ৫-৬ রাউন্ড গুলির শব্দ শুনেছেন, তাদের হাতে বন্দুক দেখেছেন।
এ বিষয়ে লালপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নাজমুল হক বলেন, ঘটনার খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। স্থানীয়দের মুখে কয়েক রাউন্ড গুলির কথা শুনেছি, তবে খোঁজাখুঁজি করেও কোনো গুলির খোসা পাওয়া যায়নি। ঘটনাস্থল থেকে একটি মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়েছে। ঘটনাটি তদন্ত করে দুর্বৃত্তদের শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে।
উল্লেখ্য, উপজেলার ঈশ্বরদী ইউনিয়নের পালিদেহা ঈদগাহের কমিটি নিয়ে ইউপি সদস্য মো. মোজাহার আলী ও ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক শরিফুল ইসলাম সোহেলের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলে আসছিল। গত রোববার (২ মার্চ ২০২৫) মো. মোজাহার আলীর সমর্থক স্থানীয় যুব সম্প্রদায়ের কয়েকজন স্বেচ্ছাশ্রমে ঈদগাহ মাঠের প্রাচীর সংস্কারের কাজ করছিলেন। এ সময় শরিফুল ইসলাম সোহেলের সমর্থকরা তাঁদের বাধা দেন। এক পর্যায়ে কনিক আহম্মেদ নামে একজনকে মারধর করেন। আত্মীয়-স্বজন জানতে পেরে তাদেরকে উদ্ধার করে কনিককে চিকিৎসার জন্য লালপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। এই ঘটনার জেরে সন্ধ্যায় মোজাহার আলীর সমর্থকরা শরিফুল ইসলাম সোহলের বাড়িতে ভাংচুর চালান। এর পর ওই দিন উভয়পক্ষেই লালপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।