বিশেষ প্রতিনিধি:
রাশিয়ার নভোভারোনেঝ পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দেুর ছয় নম্বর ইউনিটে একটি এআই ভিত্তিক অপারেটর ইনফর্মেশন সাপোর্ট সিস্টেম (OISS) এর পরীক্ষামূলক ব্যবহার শুরু হয়েছে। রাশিয়ার এই বিদ্যুৎকেন্দ্রটি বাংলাদেশের রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের রেফারেন্স হিসেবে বিবেচিত। এআই (AI) ভিত্তিক এই ব্যবস্থাটি যেকোন সম্ভাব্য ত্রুটি সম্পর্কে ৩০-মিনিট আগেই অবহিত করবে বলে রূপপুর এনপিপি নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান রসাটমের মিডিয়া উইং সোমবার (১৪ জুলাই) দুপুরে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এখবর জানিয়েছে।
রসাটম জানায়, বিদ্যুৎকেন্দ্রের পাওয়ার ইউনিট নিয়ন্ত্রন প্রক্রিয়ায় কোনও প্যারামিটারে পরিবর্তন দেখা দিলে OISS তা দ্রুত নিরূপণ করে অপারেটিং পার্সোনেলদের জানিয়ে দিতে পারে। সিস্টেমটি সম্ভাব্য কোনও বিচ্যুতি এবং এর ফলশ্রুতিতে কোনও ঘটনার সম্ভাবনা থাকলে তা সম্পর্কে আগেভাগেই অবহিত করতে সক্ষম। এই সম্ভাব্য ঘটনা সম্পর্কে ত্রিশ মিনিট আগেই অপারেটিং পার্সোনেলরা জানতে পারবেন। এরফলে, তারা সঠিক ও সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত গ্রহণের সুযোগ পাবেন যা বিদ্যুৎকেন্দ্রের নিরাপত্তাকে অনেক বেশি সুদৃঢ় করবে।
আধুনিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ৩৬০টি প্রসেস সিস্টেম, প্রায় দুইশটি ইন্টারেক্টিভ পদ্ধতি এবং বিশটি ফাংশন OISS পর্যবেক্ষণ করে, যার ফলে অপারেটরের ওপর তথ্যের চাপ অনেকাংশেই হ্রাস পায়।
অপারেটরের কোনও ভুল পদক্ষেপের ফলে অস্বাভাবিক কিছু ঘটলে আধুনিক পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে তার প্রভাব অত্যন্ত বেশি। জরুরী ভিত্তিতে যদি ১,২০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন একটি পরমাণু বিদ্যুৎ ইউনিট সাময়িকভাবে বন্ধ করতে হয়, তবে এতে ক্ষতির পরিমান কয়েক মিলিয়ন ডলার পর্যন্ত হতে পারে। এজাতীয় বিদ্যুৎ ইউনিট প্রতিদিন গড়ে ২৪.৩ মিলিয়ন কিলোওয়াট-ঘন্টা বিদ্যুৎ সরবরাহ করে, যা প্রতিটিতে চারজনের একটি পরিবার বসবাস করে, এমন ১,০০,০০০ ফ্লাটে মাসব্যাপী বিদ্যুতের চাহিদা পুরণে সক্ষম।
নভোভারোনেঝ এনপিপি’র প্রকল্প সুপারভাইজার ম্যাক্সিম টাচকভ এই সিস্টেমটি সম্পর্কে জানান, OISS এর অন্যতম সুবিধা হলো এটি কোনও এবস্ট্রাক্ট (বিমুর্ত) মডেল নয়, বরং এটি একটি পাওয়ার ইউনিটের ডিজিটাল কপি যা ঐ ইউনিটের প্রকৃত প্যারামিটার অনুসরণ করে রিয়েলটাইম মোড এ কাজ করে। আগে একজন অপারেটর ১২ হাজারের অধিক সেন্সর থেকে প্রাপ্ত ডেটা বিশ্লেষণ করতেন। এজন্য তাকে দীর্ঘ টেকনিক্যাল ডকুমেন্ট ব্যবহার করতে হতো। OISS সকল তথ্য রেগুলারি ডকুমেন্টেশন অনুসরণ করে সঠিক তথ্য ও সুস্পষ্ট নির্দেশনা প্রদান করে”।
OISS বাস্তবায়নের জন্য নভোভারোনেঝ প্রকল্পটিতে একটি পরীক্ষামূলক সাইট হিসেবে ২০১৪ সাল থেকে ব্যবহৃত হচ্ছে। এসময় বিশাল সংখ্যক ডেটা সংগ্রহ করা হয়েছে। ভবিষ্যতে এই সিস্টেমটি অন্যান্য আধুনিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে ব্যবহারের পরিকল্পনা করছে রাশিয়া।