ঈশ্বরদী (পাবনা) প্রতিনিধি:
টানা ১৮ বছরসহ দীর্ঘ ২০ বছরের সাজা ভোগ করে অবশেষে কারাগার থেকে মুক্তিলাভ করেছেন ঈশ্বরদীর দাশুড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম তুহিন। কারামুক্ত হয়ে বিপুল সংবর্ধনায় তাকে সিক্ত করেছেন ঈশ্বরদীর হাজার হাজার দলীয় নেতাকর্মী।
সোমবার (১৪ জুলাই) পাবনা জেলা কারাগার থেকে তিনি মুক্তিলাভ করেন। পাবনা জেলা বিএনপির আহবায়ক বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব ও ঈশ্বরদী পৌরসভার সাবেক মেয়র মকলেছুর রহমান বাবলুসহ বিপুল সংখ্যক নেতা কর্মীরা তাঁকে কারাগার থেকে সঙ্গে করে পাবনা থেকে সড়ক পথে সংবর্ধিত করে ঈশ্বরদীতে নিয়ে আসেন। তুহিনকে ঈশ্বরদী উপজেলা ও পৌর বিএনপির পক্ষ থেকে ব্যাপক আয়োজনে সংবর্ধনা প্রদান করা হয়। ঈশ্বরদীর পুরাতন মটরস্ট্যান্ডে এ উপলক্ষ্যে আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে ব্যাপক জনসমাগম ঘটে।
প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য ছিলেন পাবনা জেলা বিএনপির আহবায়ক বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব। সভাপতিত্ব করেন ঈশ্বরদী পৌরসভার সাবেক মেয়র মকলেছুর রহমান বাবলু। অনুষ্ঠানের সমন্বয় করেন ঈশ্বরদী উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ঈশ্বরদী সরকারি কলেজের সাবেক ভিপি রেজাউল করিম শাহীন।
সংবর্ধিত যুবদল নেতা শরিফুল ইসলাম তুহিন ছাড়াও অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন জাতীয়তাবাদী কৃষকদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি কৃষিবিদ হাসান জাফির তুহিন, পাবনা জেলা বিএনপির সদস্য সচিব মাসুদ খন্দকার, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রনেতা মাহ্বুবুর রহমান পলাশ, বিএনপি নেতা আলাউদ্দিন বিশ্বাস, আজমল হোসেন ডাবলু, নুরুল ইসলাম আক্কেল, যুবদল নেতা রফিকুল ইসলাম রকি, সাবেক ছাত্রদল নেতা মোস্তফা ইমরুল কায়েস সুমন প্রমুখ। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন ঈশ্বরদী পৌরসভার সর্বশেষ নির্বাচনে বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থী রফিকুল ইসলাম নয়ন।
প্রসংগত:, ২০০৩ সালের ৯ আগষ্ট ঈশ্বরদীর দাশুড়িয়ায় পাবনা সুগার মিলের সামনে তৎকালীন দাশুড়িয়ার ইউপি সদস্য আব্দুল খালেককে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করা হয়। খালেক হত্যা মামলার আসামী হিসেবে তুহিনকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দেওয়ার পর ২০০৫ সালে তুহিনকে র্যাব গ্রেপ্তার করে। তৎকালীন বছর দুয়েক কারাভোগের পর জামিনে মুক্ত হলেও ২০০৭ সালে ফের গ্রেপ্তার হন তুহিন। ২০০৭ সাল থেকে টানা ১৮ বছর কারাভোগের পর সরকার কর্তৃক কারাবিধি ৪০১ (১) ধারা এবং কারাবিধির ৫৬৯ নং বিধি মোতাবেক তুহিনসহ ২৯ জন কয়েদির অবশিষ্ট সাজা মওকুফ করা হয়। চলতি বছরের ১০ এপ্রিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ এ বিষয়ে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে।
এরফলে সোমবার কারাগার থেকে মুক্তিলাভ করেন তুহিন। এদিকে যুবদল নেতা শরিফুল ইসলাম তুহিনের মুক্তিলাভের খবরে গত সপ্তাহজুড়ে দাশুড়িয়াসহ ঈশ্বরদী উপজেলাজুড়ে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনার ছড়িয়ে পড়ে। সকালে ঈশ্বরদী থেকে মোটর সাইকেল ও গাড়ি বহরে হাজারো দলীয় নেতা-কর্মীরা পাবনা গিয়ে কারাগারের সামনে জড়ো হয়। কারাগার থেকে বের হওয়ার পর পাবনা জেলা বিএনপি কার্যালয়ে প্রথম দফা সংবর্ধিত করার পর গাড়িবহর নিয়ে তুহিনকে ঈশ্বরদীতে আনা হয় । ঈশ্বরদীর পথে পথে প্রচুর উৎসুক মানুষ রাস্তার দুপাশে দাঁড়িয়ে অপেক্ষমান ছিলেন। পরে পুরনো মোটরস্ট্যান্ডে আয়োজিত সংবর্ধনা শেষে দাশুড়িয়ায় নিজ বাড়িতে ফেরেন তুহিন।