সোমবার | ১ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ | ১৭ ভাদ্র, ১৪৩২

পদ্মার তীরে নৈসর্গীক প্রকৃতিতে স্থাপন হলো ‘সাঁঝের মায়া-আই লাভ ঈশ্বরদী’

ঈশ্বরদী (পাবনা) সংবাদদাতাঃ
ঈশ্বরদীতে বিধৌত পদ্মার নদীর পাড়ে স্বগৌরবে দাঁড়িয়ে আছে দেশের গুরুত্বপূর্ণ তিনটি স্থাপনা। তিনটি স্থাপনাই দেশের জন্য গৌরব ও অহংকারের। পাকশী হার্ডিঞ্জ ব্রিজ, লালন শাহ সেতু এবং রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র। এছাড়াও রয়েছে বৃটিশ আমলে স্থাপিত নৈসর্গীক সবুজ প্রকৃতিতে আচ্ছাদিত পশ্চিম রেলের বিভাগীয় সদর দপ্তর ‘পাকশী’।

প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি বলে খ্যাত পদ্মার পাড় ঘেঁষে গড়ে ওঠা পাকশীর জোড়া সেতুর অপরূপ সৌন্দর্য্য দেখেতে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ ছুটে আসে। এছাড়াও পাকশী রেলওয়ে বিভাগীয় কার্যালয়ের সামনে রাখা ব্রিটিশ আমলের রেল ইঞ্জিন, বড় বড় গাছ-গাছালি ও রেলের নানান নান্দনিক স্থাপত্য সকলকে বিমোহিত করে।
স্থানীয়রা দীর্ঘদিন ধরে এখানে পর্যটন কেন্দ্র গড়া তোলার দাবি জানালেও কেউই কর্ণপাত না করায় ভ্রমণ ও সৌন্দর্য্য পিপাসুদের পড়তে হতো চরম বেকায়দায়। ছিল না বসার জায়গা, রোদে পুড়তে ও বৃষ্টিতে ভিজতে হতো এবং শৌচাগারের কোন ব্যবস্থা ছিল না।

এই পরিস্থিতিতে দর্শনার্থীদের নানা অসুবিধার কথা বিবেচনা করে এগিয়ে আসেন সদ্য নাটোর জেলার এডিসি পদে পদোন্নতি পাওয়া ঈশ্বরদীর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুবীর কুমার দাস। তিনি নিজেই পরিকল্পনা করে ঐতিহ্যবাহী সাড়াঘাটে বহুল প্রতীতি নতুন পর্যটন পয়েন্ট ‘সাঁঝের মায়া-আই লাভ ঈশ্বরদী’ এর রূপদান করেছেন। পদ্মার বুকে সোনালি আভায় মনোমুগ্ধকর পরিবেশে ‘সাঁঝের মায়া’ ঈশ্বরদীবাসীর কাছে নতুন পর্যটন আকর্ষণ হয়ে ওঠেছে। এখানে দর্শনার্থীদের জন্য বসার জায়গা, সৌন্দর্য্য মন্ডিত ছাউনি, ফটোজোন এবং শৌচাগার নির্মাণ করা হয়েছে।

স্থানীয়রা বলেন, এ স্থাপনা ঈশ্বরদীর ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেশ-বিদেশে পরিচিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এটি পর্যটন ও বিনোদন প্রেমীদের জন্য একটি ব্যতিক্রমী কেন্দ্র হয়ে উঠবে।

জোড়া সেতু ও রূপপুরে কুলিং টাওয়ার দেখতে আসা তামান্না রহমান বলেন, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সুউচ্চ কুলিং টাওয়ার, প্রকল্পের নানা স্থাপনা, গ্রীণনিটি, জোড়াসেতু দেখার জন্য এসেছি। নদীর তীরে ‘সাঁঝের মায়া-আই লাভ ঈশ্বরদী’ সৌন্দর্য দেখে মুগ্ধ হয়েছি।

এবিষয়ে ‘সাঁঝের মায়া’ এর রূপকার উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুবীর কুমার দাস বলেন, এখানে অনেক সরকারি কর্মকর্তা, হাজার হাজার বিদেশী এবং স্থানীয় বিপুল সংখ্যক মানুষের বসবাস। তাছাড়া আশেপাশের এলাকা থেকে প্রতিদিন অনেক ভ্রমণ পিপাসু মানুষের সমাগম হয়। কাজের ফাঁকে অনেকেই ছুটে আসেন প্রাকৃতিক সৌন্দর্যমন্ডিত নদীর তীরে। আমিও নিজেও পরিবার নিয়ে প্রায়ই এখানে ঘুরতে আসতাম। তবে দর্শনার্থীরা বেড়াতে এসে স্বচ্ছন্দ্য বোধ করতো না। কারণ ছিল না বসার জায়গা, প্রখর রোদে পুড়তে এবং বৃষ্টিতে ভিজতে হতো। তাছাড়া শৌচাগার না থাকায় দর্শনার্থীদের পড়তে হতো চরম বেকায়দায়। অনেক আগেই এখানে পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলার প্রয়োজন ছিল। দর্শনার্থীদের সমস্যাগুলো মাথায় নিয়ে আমিই চিন্তা করে ‘সাঁঝের মায়া-আই লাভ ঈশ্বরদী’ রূপদান করেছি। আশা করি মনোমুগ্ধকর পরিবেশে ‘সাঁঝের মায়া’ ঈশ্বরদীবাসীসহ দর্শনার্থীদের কাছে পর্যটনের নতুন আকর্ষণ তৈরী করতে সক্ষম হবে।

উল্লেখ্য, রবিবার (৩১ আগস্ট) সন্ধ্যায় বহুল প্রতীতি নতুন পর্যটন পয়েন্ট ‘সাঁঝের মায়া-আই লাভ ঈশ্বরদী’ উদ্বোধন করা হয়েছে।

স্বত্ব: নিবন্ধনকৃত @ প্রাপ্তিপ্রসঙ্গ.কম (২০১৬-২০২৩)
Developed by- .::SHUMANBD::.