
রাশিদুল ইসলাম রাশেদ :
নাটোরের লালপুর উপজেলার বিলমাড়িয়া ইউনিয়নের উধনপাড়া গ্রামের একটি গ্রামীণ সড়কের ভাঙা কালভার্ট এখন স্থানীয়দের নিত্য দুর্ভোগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন স্কুলগামী শিক্ষার্থী, কৃষক ও সাধারণ মানুষ। দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না হওয়ায় কালভার্টটি যেন দুর্ঘটনার ফাঁদে পরিণত হয়েছে।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এই রাস্তা দিয়ে উধনপাড়া, ভেল্লাবাড়িয়া, বড়বাদকয়া, গণ্ডবিল, চকবাদকয়া ও বাগাতবাড়ি গ্রামের শত শত মানুষ উপজেলা সদরে যাতায়াত করেন। রহিমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, রহিমপুর উচ্চ বিদ্যালয়, বিলমাড়িয়া উচ্চ বিদ্যালয়, বড়বাদকয়া কমিউনিটি সেন্টার, হালুডাঙ্গা শ্রী শ্রী কালী মন্দির ও মহাশ্মশান, ঐতিহ্যবাহী ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান শ্রী শ্রী ফকির চাঁদ বৈষ্ণব গোঁসাইয়ের আশ্রম এবং ভেল্লাবাড়িয়া শাহ বাগুদেওয়ান (র.) মাজার ও মসজিদে যাতায়াতের অন্যতম রাস্তাও এটি। এছাড়া ঈশ্বরদী–লালপুর–বানেশ্বর আঞ্চলিক মহাসড়কের সঙ্গে এটি একমাত্র সংযোগ সড়ক হওয়ায় এর গুরুত্ব অনেক। কিন্তু প্রায় দুই বছর আগে অবৈধভাবে পুকুর খননের সময় ভারী যানবাহনের চাপে কালভার্টটি ধসে পড়ে। তখন মাটি খেকোরা ভাঙা অংশ মাটি দিয়ে ভরাট করে মাটি পরিবহন করে। পরবর্তীতে বর্ষায় জলাবদ্ধতা দেখা দিলে গ্রামবাসী সেই মাটি সরিয়ে দেয়। এরপর থেকেই কালভার্টের অর্ধেক অংশ ভেঙে বড় একটি গর্তের সৃষ্টি হয়েছে, যা এখন প্রাণহানির ঝুঁকি তৈরি করেছে।
স্থানীয় তরুণ মো. শিমুল আলী (২৬) বলেন, “রাতে আলো না থাকায় প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে। অনেক সময় বাইক বা ভ্যান উল্টে যায়। আমরা প্রতিদিন আতঙ্ক নিয়ে চলাচল করি। কর্তৃপক্ষ যদি দ্রুত ব্যবস্থা নিতো, তাহলে এই ভয়টা পোহাতে হতো না।”
গ্রামবাসীরা অভিযোগ করে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে তারা জনপ্রতিনিধিদের কাছে বিষয়টি জানালেও কার্যকর কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।
বিলমাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. ছিদ্দিক আলী মিষ্টু বলেন, “কালভার্টটি সত্যিই অনেক দিন ধরে ভাঙা অবস্থায় পড়ে আছে। বিষয়টি দ্রুত সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজরে আনা হবে।”
এ বিষয়ে লালপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. জুলহাস হোসেন সৌরভ বলেন, “বিষয়টি আমরা জেনেছি। অচিরেই কালভার্টটি সংস্কারের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ভাঙা কালভার্টটির পাশে প্রতিদিনই দেখা যায় স্কুলগামী শিক্ষার্থীদের ভয়ে থমকে যাওয়া মুখ, শ্রমিকদের সতর্ক পায়ে পার হওয়া আর যানবাহনের ধীর গতি। জনদুর্ভোগের এই চিত্র যেন গ্রামীণ অবকাঠামোর অবহেলার এক বাস্তব প্রতিচ্ছবি।