
নিজস্ব প্রতিবেদক :
নাটোরের লালপুরে চোরের সন্ধান চেয়ে উপজেলা জুড়ে মাইকিং করেছে আতঙ্কিত এলাকাবাসী। চোর শনাক্তে তথ্যদাতার জন্য ঘোষণা করা হয়েছে আর্থিক পুরস্কার। শনিবার (৬ ডিসেম্বর) বিকালে চোরের উপদ্রব থেকে রক্ষা পেতে এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে এই ঘোষণা দেওয়া হয়।
স্থানীয় সূত্র জানায়, শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত থেকে শনিবার ভোর পর্যন্ত উপজেলার রঘুনাথপুর গ্রামের মৃত আফানের ছেলে জালাল (৪০) ও আলাল (৩৫), মৃত ফেলুর ছেলে আয়নাল (৪৫), মৃত সেকেন্ডারের ছেলে সাগর (৪০) ও স্বাধীন (৩০) এবং মতিউর মোল্লার ছেলে মাইদুল ইসলামের (৪২) বাড়িতে চুরির চেষ্টা চালায় চোরচক্রের সদস্যরা। তবে অধিকাংশ বাড়ির লোকজন জেগে ওঠায় সেই চেষ্টা ব্যর্থ হয়।
কিন্তু রক্ষা হয়নি একই গ্রামের মৃত বারিক সরকারের ছেলে ঝন্টু সরকারের। সেদিন রাতে তার বাড়ি থেকে চার্জার ভ্যান চুরি করে নিয়ে যায় চক্রের সদস্যরা। এলাকাবাসী জানান, গত ছয় মাসে এই গ্রাম থেকে সাতটি ভ্যান চুরি হয়েছে। ভুক্তভোগীদের মধ্যে রয়েছেন—জালাল, শাহজাহান, সাইফুল, আলাল, আ. রহিম ও সাগর। তারা সবাই ভ্যান চুরির ঘটনাটি নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে একই দিন (৫ ডিসেম্বর) দুপুরে উপজেলা ভূমি অফিসের জানালা ভেঙে দুটি কম্পিউটারের মূল্যবান যন্ত্রাংশ চুরি হয়েছে। এর আগে ৩ ডিসেম্বর লালপুর-বাঘা আঞ্চলিক মহাসড়কের মঞ্জিলপুকুর এলাকায় আব্দুল মান্নান নামের এক সবজি বিক্রেতাকে ছুরিকাঘাত করে তার টাকা-পয়সা ছিনিয়ে নেয় দুর্বৃত্তরা। ১১ নভেম্বর লালপুর থানার গ্যারেজ থেকে মোটরসাইকেল চুরি হয় থানায় কর্মরত বাবুর্চি মো. আমিরুল ইসলাম পারভেজের। ১০ নভেম্বর লালপুর হল মার্কেট এলাকায় স্বর্ণের চেইন ছিনতাইয়ের শিকার হন এক নারী।
এছাড়া গত সাত মাসে উপজেলায় ব্যক্তি মালিকানাধীন ৩৪টি বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমার চুরির ঘটনা ঘটেছে, যার আনুমানিক বাজারমূল্য প্রায় ২৬ লাখ টাকা। এসব ঘটনায় থানায় একাধিক অভিযোগ ও সাধারণ ডায়েরি হয়েছে বলে ভুক্তভোগীরা জানিয়েছেন। বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমার চুরির বিষয়ে ইতোমধ্যে বিভিন্ন গণমাধ্যমে ব্যাপক সংবাদ প্রচারিত হলেও এখনো কোনো ট্রান্সফরমার উদ্ধার বা চক্রের কাউকে গ্রেপ্তার করা যায়নি। চুরির ঘটনায় আতঙ্কিত এলাকাবাসী ক্ষোভ প্রকাশ করে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে আরও তৎপর হওয়ার আহবান জানিয়েছেন।
চোরের উপদ্রব থেকে রক্ষা পেতে এলাকাবাসীকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. জুলহাস হোসেন সৌরভ। তিনি জানান, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও গ্রাম পুলিশকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। চুরির বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে মসজিদের ইমামদেরও নির্দেশনা দিয়েছে ইসলামিক ফাউন্ডেশন।
লালপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি-তদন্ত) এস. এম. রিয়াজুল হাসান বলেন, চুরি রোধে নৈশকালীন টহল বৃদ্ধি করা হয়েছে। পাশাপাশি চোরচক্রের সদস্যদের ধরতে ও চুরি হওয়া মালামাল উদ্ধারে পুলিশের তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে।
সম্পাদনা : রাশিদুল ইসলাম রাশেদ/ উপসম্পাদক /প্রাপ্তি প্রসঙ্গ /০৭-০৩