
নিজস্ব প্রতিবেদক:
নাটোরের লালপুরে মোবাইল হ্যাকিং, অনলাইন প্রতারণা ও সাইবার অপরাধ প্রতিরোধে মাধ্যমিক ও কলেজ শিক্ষার্থীদের নিয়ে সচেতনতা সভা করেছে জেলা পুলিশ। বুধবার (১৯ নভেম্বর ২০২৫) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে মোহরকয়া ডিগ্রি পাস ও অনার্স কলেজ অডিটরিয়ামে অনুষ্ঠিত এই মতবিনিময় সভায় সহস্রাধিক শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবক উপস্থিত ছিলেন।
সভায় প্রধান আলোচক হিসেবে বক্তব্য দেন নাটোরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ তারিকুল ইসলাম। তিনি পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপনার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন সাইবার অপরাধের পদ্ধতি, প্রতারকদের কৌশল এবং আত্মরক্ষামূলক পদক্ষেপ সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা দেন।
পুলিশ সুপার বলেন, “লালপুরের বিলমাড়িয়া ও দুড়দুড়িয়ার কিছু তরুণ দীর্ঘদিন ধরে মোবাইল হ্যাকিং, বিকাশ প্রতারণা, ইমু ও ফেসবুক হ্যাকিংসহ বিভিন্ন অনলাইন অপরাধে জড়িত রয়েছে। এ কারণে পুরো উপজেলার ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।” তিনি জানান, গত কয়েক বছরে পুলিশের অভিযানে অর্ধশতাধিক প্রতারক ও হ্যাকার চক্রের সদস্য গ্রেপ্তার হয়েছে। সম্প্রতি আরও ২০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পুলিশ সুপার বলেন, শিক্ষার্থীরা সচেতন হলে লালপুরকে সাইবার অপরাধের অপবাদ থেকে মুক্ত করা সম্ভব। সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে জেলা পুলিশ ধারাবাহিকভাবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানভিত্তিক সচেতনতা কার্যক্রম পরিচালনা করবে।
তিনি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে আরও বলেন, “মোবাইল ফোন এখন ব্যক্তিগত তথ্যভাণ্ডার। অসচেতনতার সুযোগে প্রতারকরা সহজেই মানুষকে বিভ্রান্ত করে অর্থ হাতিয়ে নেয়। বিশেষ করে মেয়েরা সাইবার হয়রানির ঝুঁকিতে থাকে। কোনো অনলাইন প্রতারণা বা হ্যাকিংয়ের শিকার হলে ভয় না পেয়ে আইনের আশ্রয় নিন—পুলিশ পরিচয় গোপন রেখে সহায়তা দেবে।”
সভায় উপস্থিত শিক্ষার্থীরা হাতে হাত তুলে প্রতিশ্রুতি দেন যে তারা নিজে কখনও সাইবার অপরাধে জড়াবে না, বরং বন্ধু ও পরিবারকে সচেতন করবে এবং মাদক ও সাইবার প্রতারণা প্রতিরোধে ভূমিকা রাখবে।
অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন কলেজের অধ্যক্ষ ড. মো. ইসমত হোসেন। বক্তব্য দেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বড়াইগ্রাম সার্কেল) শোভন কুমার হোড়, জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ওসি হাসিবুল্লাহ হাসিব, লালপুর থানার ওসি রফিকুল ইসলামসহ শিক্ষক ও অভিভাবকবৃন্দ।
সম্পাদনায় : রাশিদুল ইসলাম রাশেদ
সাব এডিটর, প্রাপ্তিপ্রসঙ্গ