আনোয়ারা ইমাম শেফালী :
নাটোরের লালপুরের চকনাজিরপুর ‘জুনিয়র’ (১ম-৬ষ্ঠ শ্রেণি) মাদ্রাসা ঢাকা শিক্ষা বোর্ড কর্তৃক ‘হাই’ (৭ম-১০ম/দাখিল শ্রেণি) মাদ্রাসা হিসেবে ১৯৪৮ সালে অনুমোদন পায়। ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ ওই বছর চকনাজিরপুর হাই মাদ্রাসার উদ্বোধন করেন। তৎকালীন প্রধান শিক্ষক মো. নাসির উদ্দিনের আমন্ত্রণে তাঁর সাথে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের বিদ্যালয় পরিদর্শক মো. আব্দুর রহিম উপস্থিত ছিলেন।
তৎকালীন শিক্ষার্থী সিরাজ উদ্দিন বলেন, ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ তাঁর বক্তব্যে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘তোমরা চারপাশে ছোট ছোট চারা গাছ দেখছো, এরমধ্যে কোনটা মহিরুহ হবে তোমরা কি বলতে পার? মহিরুহ হতে নিড়ানি, সার দিতে আর যত্ন নিতে হবে। তেমনি তোমাদের মহিরুহ হয়ে উঠতে সঠিক পরিচর্যা ও যত্নবান হতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘আমার নিজের চুল সামনের গুলো আমি নিজেই কাটি। আর পেছনের চুল আমার বিবি (স্ত্রী) ছেঁটে দেন।’
মাদ্রাসার তৎকালীন অপর শিক্ষার্থী বদরুল ইসলাম জানান, ওই দিন তাঁরা মাদ্রাসার একটি কক্ষে রাত্রিযাপন করেন। তাঁদেরকে মরহুম আফসার উদ্দিন মিয়ার বাড়ি থেকে খাবার পরিবেশন করা হয়। তাঁকে বদনার মাধ্যমে অজু করার জন্য পানি ঢেলে দেন তিনি। অজু শেষে তিনি যোহরের নামাজ আদায় করেন।
স্থানীয় কৌতুহলীদের অনুরোধে তিনি বিভিন্ন অঞ্চলের ভাষায় কয়েকটি শ্লোক শোনান। যেমন, ‘এক গুয়া মানসের দু গুয়া পুয়া আছে’-অর্থাৎ একজন মানুষের দুইটি ছেলে আছে।
তিনি আঞ্চলিক ভাষার সংগৃহীত তথ্য তাঁর সম্পাদিত ‘বাংলাদেশে আঞ্চলিক ভাষার অভিধান’-এ লালপুরের আঞ্চলিক ভাষা ‘কল্লা/কল্লা’= [পা, ব, কুম, রং, ফ ]-বিণ. ঝগড়াটে।। অমন কল্লা মেয়ে আর দেখি নাই। [>কল্লা হিং (চেঁচামেচি)]।-এই শব্দটি সংযোজন করেন বলে জানা যায়।