নিজস্ব প্রতিবেদক:
লালপুরে বসুন্ধরা শুভসংঘ স্কুলের শিক্ষার্থীদের স্কুল ড্রেস বিতরণ করা হয়েছে।
রবিবার (২১ এপ্রিল) দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্প গ্রুপ বসুন্ধরার সহায়তায় নাটোর জেলার লালপুর উপজেলার ডেবরপাড়া বুধিরামপুর গ্রামে অবস্থিত শুভসংঘ স্কুলের ৪০জন খুদে শিক্ষার্থীর মধ্যে স্কুল ড্রেস বিতরণ করা হয়েছে।
বসুন্ধরা শুভসংঘ স্কুলের ছাত্রী সুরাইয়া বলেন, নতুন স্কুল ড্রেস পেয়ে আমি খুবই আনন্দিত। আমারে আগে কোনো স্কুল ড্রেস ছিল না। এবার স্কুলের স্যারেরা আমাদের জন্য নতুন স্কুল ড্রেস দিছে।
সুরাইয়ার মা সেলিনা বেগম বলেন, সংসারের অভাবের কারণে সন্তানদের ঠিকমতো খাতে দিতে পারি না। মানুষের কাজ করে যে টাকা কামাই করে তা দিয়ে কোনো মতো পরিবার নিয়ে চলি। মেয়ের স্কুল ড্রেস বানিয়ে দেওয়ার মতো সামর্থ্য নেই। বসুন্ধরা শুভসংঘ স্কুল আমার মতো লোকজনের সন্তানদের লেখাপড়া করার সুযোগ করে দেওয়ায় আমাদের অনেক ভালো হইছে। আর স্কুলের নতুন ড্রেস পেয়ে আমার মেয়েসহ আমরাও অনেক খুশি।
মিমির বাবা ভ্যানচালক আব্দুল লতিফ বলেন, সারাদিন ভ্যান চালিয়ে কোনো দিন আয় হয় দুইশ আবার কোনো দিন তিনশ টাকা। সংসারের খরচ জোগানোই কষ্ট, মেয়ের স্কুলের নতুন ড্রেস বানায়ে দিবো কেমনে? শুনলাম স্কুল থেকে সবাইরে নতুন স্কুল ড্রেস দিবে। শুনে মনটা ভরে গেল। স্কুলের স্যাররা সত্যিই অনেক ভালো।
লালপুর শ্রী সুন্দরী পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, এই এলাকার শিশুদের লেখাপড়ার জন্য বসুন্ধরা শুভসংঘ স্কুলটি প্রতিষ্ঠিত বসুণ্ধরা গ্রেুপের সহযোগিতায় স্কুলের ৪৩ জন শিক্ষার্থী পেয়েছে নতুন স্কুল ড্রেস। এতে শিক্ষার্থীসহ তাদের অভিভাবকরা অনেক খুশি এবং উপকৃত হয়েছে।
লালপুর ডিগ্রি কলেজের পদর্শক আব্দুল ওয়াদুদ বলেন, বুধিরামপুর এলাকার শিশুরা অন্য এলাকার শিশুদের চেয়ে লেখাপড়াসহ সব সুযোগ সুবিধা থেকে বরাবরই বঞ্চিত হয়ে আসছে। এ সকল শিশুদের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করেই বসুন্ধরা শুভসংঘ স্কুলটি করা হয়েছে। সেখানে তারা বেশ ভালো পরিবেশে লেখাপড়া করছে। এ সকল অসহায় শিশুরা নতুন স্কুল ড্রেস পেয়ে অত্যন্ত আনন্দিত। তাদের এই আনন্দ আর হাসিখুশি মুখ দেখে আমার মনটা ভরে গেছে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের সমাজের বিত্তশালীরা সামাজে ঝড়ে পরা এ সকল শিশুদের জীবনমান উন্নয়নে এগিয়ে এলে এ সকল শিশু সুশিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে দেশের দক্ষ মানবসম্পদ হিসেবে গড়ে উঠবে।
ছায়া প্রতিবন্ধী ও অটিস্টিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সিমানুর রহমান বলেন-এই গ্রামের মানুষ গরিব, স্বল্প আয়ের মানুষ এ কারণে সন্তানদের লেখাপড়া করানোর মতো তেমন সুযোগ থাকে না। যার ফলে কোমলমতি এ সকল শিশুরা শিক্ষার দিক থেকে ঝড়ে পড়ে। শিশুদের লেখাপড়া সুযোগ তৈরি করে দিয়েছে বসুন্ধরা শুভসংঘ স্কুল। নতুন জামা পেয়ে তাদের মধ্যে বিরাজ করছে আনন্দ ও উচ্ছ্বাস। আমাদের সন্তানদের লেখাপড়ার সুযোগ হওয়াতে আমরা আনন্দিত।
স্কুল ড্রেস বিতরণকালে উপস্থিত ছিলেন লালপুর শ্রী সুন্দরী পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক মো. রফিকুল ইসলাম, লালপুর ডিগ্রি কলেজের পদর্শক আব্দুল ওয়াদুদ, ছায়া প্রতিবন্ধী ও অটিস্টিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সিমানুর রহমান, লালপুর বসুন্ধরা শুভসংঘের সাধারণ সম্পাদক রাশেদুল ইসলামসহ শিক্ষক-শিক্ষার্থী, অভিভাবক, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।