নাটোর প্রতিনিধি
নাটোরের লালপুরে সেনাবাহিনী ও পুলিশ অভিযান চালিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ইমো হ্যাকিং চক্রের ৮ সদস্য ও মাদকসহ ৪ মাদকসেবীকে গ্রেপ্তার করেছে।
বুধবার (৯ জুলাই ২০২৫) তাদের ১২ জনকে আদালতের মাধ্যমে নাটোর জেল হাজতে পাঠিয়েছে পুলিশ।
আটককৃত হ্যাকাররা হলেন, উপজেলার বিলমাড়িয়া ইউনিয়নের রহিমপুর গ্রামের আব্দুর রশিদের ছেলে সাগর আহমেদ (১৯), বড়বাদকয়া গ্রামের আবু আওয়ালের ছেলে কাইসার মুন্না (২২), মোহরকয়া গ্রামের আরিফ হোসেনের ছেলে মো. মোমিন হোসেন (১৯), বিলমাড়িয়া গ্রামের সাইদুল ইসলামের ছেলে প্রান্ত মন্ডল (২২), মকলেস মন্ডলের ছেলে মুরাদ মন্ডল (৩৭), সাব্বির মন্ডলের ছেলে সানজিদ মন্ডল (১৯), মোহরকয়া নতুনপাড়া গ্রামের আব্দুল কাদেরের ছেলে কাউসার আলী (২৪) এবং বজলুর রহমানের ছেলে রেদোয়ান আহমেদ (২২)।
আটককৃত গাঁজা ও ইয়াবাসহ ৪ মাদক ব্যবসায়ী ও সেবনকারী হলেন, উপজেলার মোহরকয়া গ্রামের শাহজাহানের ছেলে রাব্বি আলী (২১) ও রিয়াজ আলী (২০), মোহরকয়া পশ্চিমপাড়া গ্রামের আরিফ হোসেনের ছেলে আবির হোসেন (১৯) ও রাজশাহীর বাঘা উপজেলার চকছাতারী গ্রামের আমিরুল ইসলামের ছেলে রাসেল ইসলাম (২৯)।
লালপুর থানা সূত্রে জানা যায়, গোপন তথ্যের ভিত্তিতে বুধবার ভোর রাতে উপজেলার বিলমাড়িয়া ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামে অভিযান পরিচালনা করে যৌথবাহিনী। অভিযানে ইমোসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম হ্যাকিং ও কিশোর গ্যাং চক্রের ৮ সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাদের নিকট থেকে ১৬টি স্মার্ট ফোন, ১২টি বাটন ফোন, ৩০টি অতিরিক্ত মোবাইল সিম কার্ড ও একটি দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। অপর দিকে এ সময় ৪ মাদক ব্যবসায়ীর কাছে থাকা শুকনো গাঁজা ও ৫ পিছ ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয়।
পুলিশি জানায়, জিজ্ঞাসাবাদে তারা ইমোসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেশি ও প্রবাসীদের সঙ্গে উভয় কন্ঠে (নারী ও পুরুষ) কথা বলে প্রেমের সম্পর্ক স্থাপন করে অশ্লীল ভিডিও ধারণ করার কথা স্বীকার করেন। পরে সেই ভিডিও ভাইরালের হুমকি দিয়ে অর্থ হাতিয়ে নিতেন। এছাড়া নিজেদের কিশোর গ্যাংয়ের পরিচয় দিয়ে এলাকায় প্রভাব বিস্তার ও মাদক সেবনের মাধ্যমে যুব সমাজকে বিপথগামী করার চেষ্টা করতো বলে স্বীকার করেন তারা।
এদিকে অপর ৪ জন মাদক ব্যবসা ও মাদক সেবনের মাধ্যমে যুব সমাজকে বিপথগামী করার চেষ্টা করতেন এবং নিজেদের কিশোর গ্যাংয়ের পরিচয় দিয়ে এলাকায় প্রভাব বিস্তার করতেন বলে জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেন।
এ বিষয়ে লালপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মমিনুজ্জামান জানান, দীর্ঘদিন ধরে ইমো হ্যাকার চক্রগুলো সাধারণ মানুষ ও প্রবাসীদের অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে। হ্যাকিং চক্রের ৮ সদস্যকে সাইবার সুরক্ষা আইনে এবং ৪ জনকে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে আটক করে আদালতের মাধ্যমে তাদেরকে বুধবার আদালতের মাধ্যমে নাটোর জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।
এর আগে অভিযান চালিয়ে ২০২৫ সালের ২৪ মে উপজেলার মোহরকয়া থেকে হ্যাকার চক্রের ৩ সদস্য ও ২৭ মে নওপাড়া ও পানসিপাড়া গ্রাম থেকে এ চক্রের ৫ সদস্যকে হ্যাকিংয়ের বিপুল পরিমাণ সরঞ্জাম ও মাদকসহ গ্রেপ্তার করে যৌথবাহিনী। সেনাবাহিনীর এমন অভিযানকে সাধুবাদ জানিয়েছেন এলাকার সচেতন মহল। হ্যাকার, ব্যাংক রিসিট জালিয়াতি চক্র ও মাদক ব্যবসায়ীরা নির্মূল না হওয়া পর্যন্ত অভিযান অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান স্থানীয়রা।