নাটোর প্রতিনিধি :
পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড ও পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিকে একীভূত করে অভিন্ন চাকরিবিধি বাস্তবায়ন এবং চুক্তিভিত্তিক ও অনিয়মিত কর্মচারীদের নিয়মিতকরণের দুই দফা দাবিতে কর্মবিরতি পালন করেছেন নাটোর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর ৫৭৬ জন কর্মকমর্তা-কর্মচারী।
সোমবার (১ জুলাই ২০২৪) বড়াইগ্রামের বনপাড়াস্থ নাটোর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর প্রধান কার্যালয়ে কর্মবিরতি পালন করেন তাঁরা। সারাদেশের ৮০টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ৪০ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী বিশেষ ব্যবস্থায় জরুরি বিদ্যুৎ সেবা চালু রেখেই কর্মবিরতির পালন করছেন।
কর্মবিরতিকালে বক্তারা জানান, দেশের প্রত্যন্ত এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহের কাজে নিয়োজিত পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎসেবা দিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের দ্বৈতনীতির কারণে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা হতে বঞ্চিত হচ্ছে দেশের ৮০টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির প্রায় ৪০ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী। দেশের প্রত্যন্ত এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহের কাজে নিয়োজিত কর্মীরা একই প্রতিষ্ঠানে চাকরি করলেও পদ-পদবী, বেতন-ভাতা, বোনাসসহ পদোন্নতির ক্ষেত্রে চরম বৈষম্যের শিকার হয়ে আসছেন। বিআরইবির অদক্ষতা ও নিম্নমানের সামগ্রীর কারণে গ্রাহকরা হয়রানির শিকার হচ্ছেন।
এসব বৈষম্যের বিরুদ্ধে এবং অভিন্ন চাকরি বিধি বাস্তবায়নের দাবিতে চলতি বছরের ৫ মে থেকে কর্মবিরতি পালন করে কর্মকর্তা কর্মচারীরা। সমস্যা সমাধানে ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে আলোচনায় বসবে বিদ্যুৎ বিভাগের এমন আশ্বাসে কাজে ফিরে যান। বিদ্যুৎ বিভাগের চাহিদা অনুযায়ী সারাদেশের ৮০টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ৩৭ হাজার ৫৪২ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর স্বাক্ষর সম্বলিত চিঠি বিদ্যুৎ বিভাগসহ বিআরইবিতে জমা দেওয়া হয়। যেখানে বোর্ডের প্রতি অনাস্থা জানানো হয়।
১৫ কার্যদিবসের মধ্যে আলোচনায় বসার কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি এবং সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক সাসপেন্ড, সংযুক্ত ও স্ট্যান্ড রিলিজ যারা আছে সবাইকে এক সপ্তাহের মধ্য অব্যাহতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত থাকলেও সাসপেন্ড দুইজন ও স্ট্যান্ড রিলিজ দুইজনকে অদ্যাবধি অব্যাহতি দেওয়া হয়নি। তাই আবারও বাধ্য হয়ে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের নিপীড়ন ও শোষণ থেকে বাঁচতে পুনরায় কর্মবিরতি করছেন।
ঘোষিত দুটি দাবি হলো ১. স্মার্ট ও টেকসই বিদ্যুৎ ব্যবস্থা বিনির্মাণে আরইবি-পিবিএস একীভূত করণসহ অভিন্ন চাকরি বিধি বাস্তবায়ন করতে হবে এবং ২. ভবিষ্যৎ বিদ্যুৎ ব্যবস্থা সচল রাখতে ও গ্রাহক সেবার মান উন্নয়নের জন্য সকল চুক্তিভিত্তিক ও অনিয়মিত কর্মচারীদের চাকরি নিয়মিত করতে হবে।
নাটোর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ লালপুর জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (ডিজিএম) মো. রেজাউল করিম বলেন, সোমবার সকাল থেকে সারাদেশে সবগুলো পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির প্রধান কার্যালয়ের সামনে কর্মকর্তা কর্মচারীরা অবস্থান শুরু করেছেন। গ্রাহক সেবা সচল রেখে কর্মকর্তা কর্মচারীদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে বোর্ড থেকে কোনো প্রকার উস্কানিমূলক আচরণ বা হয়রানী করা হলে যে কোনো অনাকাক্সিক্ষত পরিস্থিতির জন্য পল্লীবিদ্যুতায়ন বোর্ড এককভাবে দায়ী থাকবে।