নাটোর প্রতিনিধি :
দুবার ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য (ইউপি মেম্বার) পদে পরাজিত গ্রাম পুলিশ মো. এসকেন আলী এমপি হওয়ার স্বপ্ন ভেঙ্গে গেছে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নাটোর-১ (লালপুর-বাগাতিপাড়া) আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে। এ খবর শুনে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন তিনি।
সোমবার (৪ ডিসেম্বর ২০২৩) যাচাই-বাছাইয়ে মনোনয়নপত্র বাতিল করেন নাটোর জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক আবু নাছের ভূঁঞা।
উপজেলার লালপুর ইউনিয়ন পরিষদের বালিতিতা ইসলামপুর গ্রামের ৪নং ওয়ার্ডের একজন গ্রাম পুলিশ মো. এসকেন আলী। বাবা মৃত আকবর আলী মণ্ডল ও মা রংবাস বেগমের পাঁচ ছেলে ও এক মেয়ের মধ্যে সবার বড় তিনি। স্ত্রী শাহানাজ বেগম গৃহিণী। তাঁদের দুই সন্তান ইয়াসমিন খাতুন একাদশ শ্রেণি ও সুরমিলা আক্তার লাবনী সপ্তম শ্রেণিতে পড়ছে।
কান্নাজড়িত কন্ঠে মো. এসকেন আলী বলেন, নিয়ম অনুযায়ী সকল কাগজপত্র জমা দিয়েছি কিন্তু সাড়ে ৩ হাজার ভোটারের স্বাক্ষর জমা দিতে হবে এটা তাঁর জানা ছিল না। তৃতীয় শ্রেণিতে ওঠার পর বাবা মারা যান। সংসারের হাল ধরতে গিয়ে আর পড়াশোনা করা হয়নি। যেকোনো ভোট এলে খুব আনন্দ লাগে। অংশগ্রহণ করতে ইচ্ছে করে। এর আগে দুবার ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য পদে ভোটে অংশ নিয়েছিলেন। প্রথমবার সপ্তম আর গত নির্বাচনে তৃতীয় হয়েছিলেন। গতবার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের খরচ মেটানোর জন্য একটি গরু বিক্রি করেছিলেন। এ ছাড়া উপজেলা পরিষদের ভোটে ভাইস চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করার জন্য সবার দোয়া চেয়ে পোস্টার লাগান। কিন্তু সে বছর আর্থিক সংকটের জন্য ভোট করতে পারেননি।
তিনি আরও বলেন, প্রায় ২০ বছর আগে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোট করার পরিকল্পনা করেছিলাম। সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে এ বছর ভোট করার জন্য বাড়ির পাশের এক কাঠা জমি আড়াই লাখ টাকায় বিক্রি করেছি। মনোনয়ন ফরম তুলে ভোটের কাজ শুরু করেছি। এখন পর্যন্ত এতে ৩৬ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। বসতভিটের আর এক কাঠা জমি অবশিষ্ট রয়েছে।
রিটার্নিং কর্মকর্তা আবু নাছের ভূঁঞা বলেন, কোনো এলাকায় নির্বাচন করতে হলে সে এলাকার মোট ভোটার সংখ্যার এক শতাংশ ভোটারের স্বাক্ষর পূরন করে জমা দিতে হবে। নাটোর-১ (লালপুর-বাগাতিপাড়া) আসনে ১ শতাংশ ভোটার সংখ্যা ছিল ৩৪৯৪ জন। কিন্তু এসকেন আলী মাত্র ৯৮০ জনের স্বাক্ষর জমা দিয়েছেন। তাই নির্বাচন কমিশনের নিয়ম অনুযায়ী শর্ত পূরণ করতে না পারায় তাঁর মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে।